ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মা-বাবা হারিয়ে কাঁটাতারে আটকা পড়া দুই শিশুর কথা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
মা-বাবা হারিয়ে কাঁটাতারে আটকা পড়া দুই শিশুর কথা কাঁটাতারে আটকা পড়া দুই রোহিঙ্গা শিশু

চট্টগ্রাম: সোমবার বেলা ১১ টার দিকের ঘটনা। মিয়ানমারের তুমব্র লাউয়ে পাড়ায় সেনাবাহিনী জ্বালিয়ে দেয় রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে করে গুলিও চালাতে থাকে বেপরোয়াভাবে। এতে মারা পড়েন কেউ কেউ। তখন রোহিঙ্গারা দিকবিদিক ছুটতে থাকেন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে।

কিন্তু কাঁটাতার পেরিয়ে বড়রা বাংলাদেশ প্রবেশ করতে পারলেও অনেক শিশু আটকা পড়ে। তাদেরেই দুজন রোকেয়া( ৭) ও দিলারা (৪)।

সম্পর্কে তারা আপন বোন।

প্রায় তিন ঘণ্টা কাঁটাতারে আটকে থাকা এই দুই শিশুকে উদ্ধার করেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেলোয়ার হাসান নামের এক যুবক।

উদ্ধারকারি রোহিঙ্গা যুবক দেলোয়ার হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সোমবার বেলা ১১ টার দিকে  মিয়ানমারের তুমব্র লাউয়ে পাড়ায় মিলিটার ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে মিলিটারিরা বেপরোয়া গুলি চালালে আমাদের অনেকেই মারা যায়। তখন আমরা দিকবিদিক ছুটোছুটি করে বাংলাদেশ সীমান্তের ঘুমধুমের দিকে চলে আসি। কাঁটাতার পার হয়ে বড়রা আসতে পারলেও অনেক শিশু আটকা পড়ে। আবার অনেক শিশু কাঁটাতার পার হতে গিয়ে আহত হয়। এদের মধ্যে অনেকেই  মা বাবা হারিয়ে কাঁটাতারে এসে ভয় আর আতঙ্কে বসে থাকে। ’

দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া শিশু দুই জন তাদের মা বাবাকে হারিয়ে ফেলে সীমান্তের কাছাকাছি এসে। তখন এই দুই শিশু ভয় আর আতঙ্কে কাঁটাতারে লুকিয়ে থাকে। প্রায় ৩ ঘন্টা তারা এভাবে লুকিয়ে থাকে। আমি পালিয়ে আসার সময় তাদের দেখতে পাই। পরে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

‘কাঁটাতারের কাছে কেউ থাকলে মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনী তাদের গুলি করে । তাই শিশু দুইজনের জীবন ঝুঁকি ছিল। ’-বলেন দেলোয়ার।

উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর বাবা শওকত আলী ও মা মিনুয়ারা বেগম। তারা দুজন  হাল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

শিশু রোকেয়া বাংলানিউজকে জানান, তাদের ঘরে যখন আগুন ধরিয়ে দিলে তাদের মা-বাবা তাদের নিয়ে পালিয়ে আসে। এসময় মিলিটারি গুলি করলে সবাই এদিক ওদিক ছুটতে থাকি। এসময় মা-বাবা আমাদের কাছ থেকে পৃথক হয়ে যান। পরে তারা দুইবোন অন্যদের সাথে সীমান্তে চলে আসে। এসময় অন্যরা তাদের ফেলে চলে গেলে দুইবোন কাঁটাতারের ভেতর লুকিয়ে থাকে।

পরে রোহিঙ্গা যুবক দেলোয়ার হাসান তাদের নিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তে আশ্রয় নেয়।   তবে তাদের মা-বাবা কোথায় আছেন, বেঁচে আছেন কিনা তা জানা যায় নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।