ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকটে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকটে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চলাচলরত মেইল, এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে দিনে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ প্রয়োজন ১৬৪ টি। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১০২টি। দৈনিক ৬২টি কোচ সংকটে একদিকে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অন্যদিকে যাত্রীরা আনন্দদায়ক ভ্রমণ বিঘ্নি হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিক যাত্রীর চাপে রোলিং স্টকের যান্ত্রিক ত্রুটি ক্রমশ বাড়ছে। যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আয় কমরার পাশাপশি আর্থিক ক্ষতি বাড়লেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

পরিবহন বিভাগ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকটের বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় দিনদিন এ শ্রণির কোচ সংখ্যা কমছে।

সর্বশেষ গত ১৩ সেপ্টেম্বর কোট সংকটের চিত্র তুলে ধরে প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলীকে পত্র দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আবদুল হাই বাংলানিউজকে বলেন, আমদানিকৃত কোচ সংযোজনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে সংকট কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে মেইল-এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ আমদানি হয়নি। ফলে সংকট তৈরি হয়েছে। পুরোনো কোচ মেরামত করে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচে সংযোজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  

জানা গেছে, ২০১৬ সালে এবং চলতি বছরের শুরুতে রেলের বহরে ২৭০টি নতুন কোচ যুক্ত হয়। এর মধ্যে ১৭০টি ব্রডগেজ ও ১০০টি মিটারগেজ কোচ। ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে আমদানি করা এসব কোচ দিয়ে বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর পাশাপাশি ঘাটতি নিয়ে চলাচলকারী রেলে সংযোজন করা হয়। গত এক দশকে দ্বিতীয় শ্রেণির কোন কোচ আমদানি না হওয়ায় মেইল, এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনগুলোর সংকট এখনো কাটেনি।

বাণিজ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেনের নির্ধারিত আসনের চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহনের সুযোগ নেই। তবে দ্বিতীয় শ্রেণির মেইল-এক্সপ্রেস-লোকাল ট্রেনের নিম্নবিত্ত কিংবা সাধারণ যাত্রীরা ভ্রমণ করায় কোচ সংখ্যা কম হলেও অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি হয়। ফলে তুলনামূলক রাজস্ব আয় বেশি হয় দ্বিতীয় শ্রেণির ট্রেন থেকেই।  

রেলের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ৩১টি রেকের (কোচের সমন্বয়ে গঠিত ট্রেন) ৪৩টি মেইল-এক্সপ্রেস ট্রেনের স্ট্যান্ডার্ড কম্পোজিশন (টাইম টেবিল অনুযায়ী কোচের পরিমাণ) থাকার কথা ১৬৪ টি কোচ। কিন্তু ১৩ সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোচ রয়েছে ১০২টি। অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণির ট্রেনগুলো ৬২টি কোচ ঘাটতি নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের উভয় অঞ্চলে মোট ৩৪২টি ট্রেনের মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ২৬ শতাংশ হলেও কেবল আন্তঃনগর ট্রেনের উন্নয়নেই বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ফলে দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ সংকট বাড়ছে। বিগত দশকে মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ আমদানি না হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।