ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রোহিঙ্গা: আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সোচ্চার হতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
রোহিঙ্গা: আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সোচ্চার হতে হবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সোচ্চার হতে হবে

চট্টগ্রাম: রোহিঙ্গা সমাস্যার সমাধানে ওআইসি, জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা চালিয়ে মিয়ানমার নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি জনগোষ্ঠীর পিঠ যখন দেওয়ালে ঠেকে যায় তখন তারা বিদ্রোহী হয়ে উঠে।

শনিবার সকালে চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

  বিশ^বিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ও ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স, ডেভেলপম্যান্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিস (আইজিডিআইএস) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিগত নিধন ও বাংলাদেশের সংকট: সমাধান কোন পথে?’ শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিআইইউর উপাচার্য ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইইউর আইন অনুষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন। প্যানেল আলোচক ছিলেন সামরিক বিশ্লেষক এবং সাবেক কূটনীতিক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম।  

অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের দেওয়া সুপারিশের আলোকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে। মিয়ানমারে ১৩৫ টি জাতিসত্ত্বাকে স্বীকৃতি দিলে রোহিঙ্গাদের দিবে না কেন?

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের আরব বসন্তের পর ২০১৬ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এক বছরে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪০১ জন শরণার্থী গ্রহণ করেছিল। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ১৯ দিনেই গ্রহণ করেছে ৪ লাখের বেশি।

অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা অষ্টম শতাব্দী থেকে রাখাইনে বসবাস করছে। শত শত বছর ধরে তারা সেখানে আছে। সরকারি দায়িত্ব এমনকি সংসদ সদস্য হিসেবেও তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করেছে। অথচ সেখানে তারা আজ জাতিগত নিধনের শিকার, তাদের কোন অধিকার নেই।

অতীতে জাতিসংঘ এবং  আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর  ভূমিকায় বাংলাদেশসহ  দক্ষিণ সুদান, পূর্ব তিমুর, যুগোশ্লাভিয়া, বসনিয়ার মত দেশগুলো স্বাধীনতা লাভ করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ মিয়ানমারসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করতে পারে।

অনুষ্ঠানে সামরিক বিশ্লেষক এবং সাবেক কূটনীতিক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, সবার আগে মানুষ। রোহিঙ্গাদের দুরাবস্থার জন্য তারা দায়ী নয়।

মিয়ানমারে কূটনীতিক হিসেবে কাজ করা এই সামরিক বিশ্লেষক বলেন, মিয়ানমারে সব কুকীর্তির পেছনে রয়েছে সেদেশের সেনাবাহিনী। অং সাং সূচীর সেখানে কোন ক্ষমতা নেই। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের দেওয়া প্রতিবেদন রোহিঙ্গাদের পক্ষে হওয়ার পরও সেখানে ২৫ আগস্ট হামলা হলো কেন।

সিআইইউর উপাচার্য ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী আশংকা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমারে চলমান এ সংকটের প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রাম হুমকির মুখে রয়েছে। কারণ চট্টগ্রাম ফ্রন্টিয়ার লাইনে রয়েছে। তাই চট্টগ্রামের নিরাপত্তার ব্যাপারটি ভেবে দেখতে হবে।

সিআইইউর আইন অনুষদের প্রভাষক সাইদা তালুকদার রাহীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিআইইউর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।