ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাসায় গৃহবধূর মরদেহ, সন্তান নিয়ে পালিয়েছে স্বামী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
বাসায় গৃহবধূর মরদেহ, সন্তান নিয়ে পালিয়েছে স্বামী  আফসানা আক্তার শান্তা

চট্টগ্রাম: নগরীর কোতয়ালী থানার আলকরণ এলাকায় নিজ বাসা থেকে আফসানা আক্তার শান্তা (২৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

ওই বাসায় তার স্বামী শাহআলম মিঠু (৩০) এবং পাঁচ বছরের মেয়ে মুশফিও থাকতেন।   শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মরদেহ উদ্ধারের সময় শান্তার স্বামী-সন্তানকে বাসায় পায়নি পুলিশ।

আলকরণ এক নম্বর গলির জনৈক আব্দুস সামাদের বাড়ির দ্বিতীয় তলার ১৮ নম্বর বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের কোতয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো.জাহাঙ্গীর আলম।

‘শান্তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

  তার মরদেহ খাটের উপর পড়েছিল।   তবে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা একটি ওড়না পেয়েছি।   শান্তা আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যার পর স্বামী সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে, সেটি এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। ’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর জলসা মার্কেটের দোকানকর্মী শাহআলম মিঠুর বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায়।  শান্তা কুমিল্লা নগরীর কাশারীপট্টি এলাকার বেলাল হোসেনের মেয়ে। কুমিল্লার মেয়ে শান্তার সঙ্গে সাত বছর আগে বিয়ে হয় মিঠুর।

মেয়ে মুশফি নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডে সিটি গ্রামার স্কুলের প্লে শ্রেণির ছাত্রী।

ছবি ফেসবুক থেকে নেয়া 

প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে এসি জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, পরকীয়া সংক্রান্ত বিষয়ে মিঠু তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন।   বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে, যা সমাধান করেছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা।

‘হতে পারে, গত রাতে ঝগড়া হয়েছিল।   এর জেরে শান্তা আত্মহত্যা করেছে।   ভয়ে মিঠু তার মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে।   অথবা সে নিজেই খুন করে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর জন্য ফ্যানের সঙ্গে ওড়না ঝুলিয়ে রেখেছিল। ’

তবে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিঠুকে মেয়ে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে কয়েকজন প্রতিবেশী দেখেছেন বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।  দরজা খোলা থাকায় কয়েকজন প্রতিবেশী বিছানায় শান্তার নিথর দেহ দেখে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে থানায় খবর দেন বলেও জানিয়েছেন এসি জাহাঙ্গীর আলম।

শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকায় খুনের বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান পুলিশ।   মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টির রহস্য উন্মোচন হবে।   অথবা মিঠু ও তার মেয়েকে পেলেও ঘটনা জানা যাবে।

শান্তার বাবা আনোয়ার হোসেন বেলাল দাবি করেছেন, শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন আছে। তার মেয়েকে নির্যাতনের মাধ্যমে মিঠু হত্যা করেছে।

‘ঘরের মধ্যে মিঠু প্রায়ই নেশা করত। তারপর আমার মেয়েকে মারত। বিয়ের পর থেকে অনেকবার সে আমার কাছ থেকে টাকা এনেছে। টাকার জন্য প্রায়ই আমার মেয়েটাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিত। আমি কয়েকবার মেয়েকে কুমিল্লা নিয়ে গেছি। পরে আবার আমার হাতেপায়ে ধরে মিঠু গিয়ে নিয়ে এসেছে। ’

মিঠুর সঙ্গে অন্য কোন নারীর সম্পর্ক ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ধরনের কথা অবশ্য আমি শুনিনি। এটা খোঁজখবর নিয়ে জানাতে হবে।

এদিকে বাসার ভেতরে গৃহবধূর মরে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মোস্তাইন হোসেন এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনও।

এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭

আরডিজি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।