ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পথে পথে তল্লাশি, রোহিঙ্গাদের সতর্কে মাইকিং

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
পথে পথে তল্লাশি, রোহিঙ্গাদের সতর্কে মাইকিং সড়কের পাশে অস্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছে রোহিঙ্গারা। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: উখিয়া-টেকনাফের বাইরে কক্সবাজারের অন্যান্য এলাকাসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সারাদেশে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কক্সবাজারের প্রবেশপথ সহ সড়ক-মহাসড়কে তল্লাশি জোরদার করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

কক্সবাজারের প্রবেশপথ রামুর ক্রসিং মোড়, চকিরয়ার মালুমঘাট ও পটিয়া ক্রসিংয়ের তিনটি নিয়মিত চেকপোস্টে টহল জোরদার করা হয়েছে। সঙ্গে এসব স্থানে অতিরিক্ত তিনটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

চকরিয়ার চিরিঙ্গা ও চন্দনাইশের দোহাজারী চেকপোস্টেও তল্লাশি জোরদার করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক, উখিয়া-টেকনাফ রোড সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ টহল টিম কাজ করছে।

এসব এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের কোথাও আসা-যাওয়া করতে নিষেধ করা হচ্ছে।

মাইকিংয়ে বলা হচ্ছে, ‘আপনারা সড়কে আসবেন না, যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আসা-যাওয়া করবেন না। ’

এদিকে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সড়ক ও সড়কের পাশে গড়ে ওঠা অস্থায়ী রোহিঙ্গা বসতি পরিদর্শন করেন হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলের পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ। পরিদর্শন শেষে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

হাইওয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সড়কের পাশে রোহিঙ্গারা বসতি গড়ে তুলেছে। কক্সবাজারের প্রবেশপথ রামু ক্রসিং থেকে শুরু করে উখিয়া-টেকনাফ সড়কে রোহিঙ্গারা চলাচল করছে। তারা এক জায়গায় বসে নেই। অনেকেই আছে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে।  এতে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমার মাইকিং করেছি। টহল জোরদার করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে যেন কোন রোহিঙ্গা বের হতে না পারে, তারা যেন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য রামু ক্রসিং মোড়, চকিরয়ার মালুমঘাট ও পটিয়া ক্রসিংয়ের তিনটি নিয়মিত চেকপোস্টে টহল জোরদার করা হয়েছে। সঙ্গে এসব স্থানে অতিরিক্ত তিনটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি গেইটের বাইরে সীতাকুণ্ড থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত চেকপোস্টগুলোতে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।   যানবাহনে তল্লাশি করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতেও আমরা সড়কে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাসহ রোহিঙ্গাদের আটক করেছি। এখন তো রোহিঙ্গাদের স্রোত বেশি। এ পরিস্থিতি তাদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। তাই টহল জোরদার করা হয়েছে।  

এছাড়া সকাল থেকে সড়কের পাশে অস্থায়ী বসতি গড়ে তোলা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। পথে পথে চলছে তল্লাশি। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি টিমও তল্লাশি চালাচ্ছে।

এরইমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লিংক রোড, টেকনাফ রোডের মিঠাছড়ি, উখিয়া বাজার, মেরিন ড্রাইভ সড়কে চেকপোস্ট চালু করা হয়েছে। এসব চেকপোস্টে পুলিশ, আনসার, জেলা প্রশাসনের সমন্বিত টিম কাজ করছে।  

গত মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়েছে। নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করেছেন রোহিঙ্গারা।

জাতিসংঘ তথ্য দিয়েছে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে তিন লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। তবে স্থানীয়দের মতে, এ পর্যন্ত এসেছে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা ঢুকেছে টেকনাফ ও উখিয়ায়।

এছাড়া সহিংসতা শুরুর পর মিয়ানমার প্রায় রোহিঙ্গাশূন্য হতে চলেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭

আরডিজি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।