ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রধান বিচারপতি পদের যোগ্যতা হারিয়েছেন: হাছান মাহমুদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
প্রধান বিচারপতি পদের যোগ্যতা হারিয়েছেন: হাছান মাহমুদ ড. হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রাম: বিচারপতির অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হওয়ার শপথ ভঙ্গ, বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সংবিধান লংঘন করায় পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। উত্তর জেলা ছাত্রলীগ ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

 

প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনি সংসদকে অপরিপক্ব বলেছেন। এ সংসদই তো আপনার বেতন-ভাতা মঞ্জুর করেছেন।

আপনি রায়ের পর্যবেক্ষণে যেহেতু এ কথা বলেছেন, আমি অনুরোধ করবো আপনি সমস্ত বেতন-ভাতা ফেরত দিন। আপনি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হওয়ার বিচারপতির শপথ ভঙ্গ করেছেন। বাংলাদেশের সংবিধানে লেখা আছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আপনি আপনার রায়ে বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। আপনি সংবিধান লংঘন করেছেন। সুতরাং আপনি পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

আপনি আদালতে মামলা চলাকালীন নিজের মুখে স্বীকার করেছেন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তার জন্য রাজাকার আলবদরদের সহায়ক শক্তি হিসেবে গ্রামে গ্রামে যে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। এটি আপনি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। অর্থাৎ আমাদের দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য অকাতরে যখন প্রাণ দিচ্ছিলেন তখন আপনি পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে শান্তি বাহিনীর সদস্য ছিলেন। আপনি এ পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। নিজেই মুখ ফস্কে বলে ফেলেছেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে আপনার মতো মৌলভীবাজার কোর্টের আইনজীবী কোনো দিন হাইকোর্টের বিচারপতি হতে পারতেন না। সংখ্যালঘু ও উপজাতীয় সম্প্রদায়ের বিবেচনায় আপনাকে হাইকোর্টের বিচারপতি করা হয়েছিল। অনগ্রসর সম্প্রদায় থেকে যে বিচারপতি হতে পারে সে উদাহরণ সৃষ্টি করার জন্য। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই আপনি প্রধান বিচারপতি হয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আপনি প্রধান বিচারপতির পদকে কলঙ্কিত করেছেন। আপনি প্রধান বিচারপতির পদকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলেই প্রধান বিচারপতি আদালতে বসে পাকিস্তানের উদাহরণ দেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এটি পাকিস্তান নয়, পাকিস্তানকে তাড়িয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ জানে কেউ যদি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সেটি কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়।

তিনি বলেন, আপনি (প্রধান বিচারপতি) রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আপনার রায়ের পর্যবেক্ষণে। রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতীক। কেউ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে যদি প্রশ্ন তোলে, রাষ্ট্রপতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয় সেটি দেশদ্রোহিতা কিনা চিন্তার বিষয় রয়েছে। আইনজ্ঞরা সে ব্যাপারে ভালো মতামত দিতে পারবেন।  

হাছান মাহমুদ বলেন, আপনি বলেছেন বিচার বিভাগ অনেক ধৈর্য ধরেছে। আমরা আওয়ামী লীগও অনেক ধৈর্য ধরেছি। দেশের মানুষ অনেক ধৈর্য ধরেছে। আমি অতীতের উদাহরণ বলতে চাই না। বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মারা হয়েছে। এখনো সেই ঘটনা ঘটেনি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক তা চাই না। আরেকজন প্রধান বিচারপতি এজলাসে বসতে পারেননি। বিদায় নিতে হয়েছে। আমরা চাই না দেশে সেই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। আপনি দয়া করে পদত্যাগ করুন। দেশের জনগণ অনেক ধৈর্য ধরেছে। দেশের জনগণ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধৈর্য ধরবে না।  

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়বের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অংশ নেন উত্তর জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম চিশতী, উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন খান, আওয়ামী লীগ নেতা তড়িৎ কান্তি দে, এমরুল করিম রাশেদ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।