ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অডিট যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান করদাতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
অডিট যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান করদাতারা আয়কর সভায় অতিথিরা। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া আয়কর ফাইলকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে অডিটে ফেলার সমালোচনা করে অযথা হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন করদাতারা। তারা বলছেন, এ ধরনের হয়রানি বন্ধ না হলেও আইন করেও কোন সুফল পাওয়া যাবে না।

শনিবার (১৯ আগস্ট) ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত মতিবিনিময় সভায় অডিট নিয়ে হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন করদাতারা। ‘নতুন আয়কর আইন: জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) পারভেজ ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

একজন করদাতার ফাইল বছরে তিনবার অডিট করার নজির রয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দৈবচয়নের মাধ্যমে কর্মকর্তারা ফাইল অডিট করেন।

এতে করদাতারা হয়রানির শিকার হন। হয়রানিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ঝামেলা ছাড়া যাতে ব্যবসায়ীরা আয়কর দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করাটা জরুরি।  

ফাইল অডিটে ভোগান্তির বর্ণনা দিয়ে বিশ্বজিত চৌধুরী বলেন, ঢাকায় জায়গা বিক্রি করে চট্টগ্রামে আমি একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। কোন প্রক্রিয়ায় কাজটি হয়েছে সেটা আমার আইনজীবী ফাইলে দিয়েছিলেন। সেই ফাইল নিয়ে অডিট আপত্তি তোলা হলে আইনজীবীসহ আমি কমিশনারের কাছে যাই।

তখন তিনি বললেন, ‘আপনার ফাইল ঠিক আছে। আমি সংশ্লিষ্ট অফিসারকে বলে দিচ্ছি। ’ পরে আমি চলে আসলাম। কিন্তু তার ঠিক ১৫ দিন পরেই আবার আমার কাছে আরেকটি চিঠি পাঠানো হলো। সেখানে আমার ফাইলে কয়েকটি অসঙ্গতি তুলে ধরে আবারও দেখা করতে বলা হয়। এই যদি হয় অবস্থা, তবে আয়করভীতি কাটবে না।

করের আওতা না বাড়িয়ে যারা কর দেন তাদেরকে হার বাড়িয়ে দেওয়া হয় উল্লেখ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো.মনিরুজ্জামান বলেন, যারা কর দেন প্রতিবছর তাদেরকে হার বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্নভাবে হয়রানিও হন তারা। অথচ যারা কর দেয় তাদের সেবা নিশ্চিত করা উচিত।

কর সেবা নিশ্চিত করতে পারলে বিদেশে টাকা পাচার রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

সামর্থ্যবানদের করদানে এগিয়ে আসা উচিত মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সবার সহযোগিতার কারণেই অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ দিয়ে এখনো আয়কর বিভাগ চলছে। আইন প্রণয়নের উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

শিল্প আইনে কর প্রণোদনা রাখার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, আইনের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য আইন। তাই মানুষের সামর্থ্য বিবেচনা করে আইন প্রয়োগ করতে হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো.আব্দুর রউফ, ইউএসটিসি’র উপাচার্য অধ্যাপক প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, নগর পুলিশ কমিশনার মো.ইকবাল বাহার, চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সেলিম উদ্দিন, অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ খান, অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭

এমইউ/আইএসএ/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।