ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্যার ‘অজুহাতে’ সবজির দাম আকাশচুম্বী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
বন্যার ‘অজুহাতে’ সবজির দাম আকাশচুম্বী সবজির বাজার

চট্টগ্রাম: উত্তরবঙ্গে বন্যায় বিভিন্ন আবাদি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সারাদেশের মত চট্টগ্রামেও এর প্রভাব পড়েছে। নওগাঁ, যশোর থেকে সবজি আনায় যাতায়াত খরচ পড়ছে বেশি। ফলে নগরীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দাম আকাশচুম্বী। ৬০-৭০ টাকার কমে মিলছে না কোন সবজি।  কিছু কিছু সবজির ক্ষেত্রে তা ঠেকেছে ১২০ টাকা পর্যন্তও।

কিন্তু বন্যার অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজিও ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।   তাদের মতে, বন্যা-পরিবহন খরচ বৃদ্ধি সবমিলিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সবজির দাম বেশি হতেই পারে।

তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও এ সুযোগে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি বেশি দামে বিক্রি করছে। ফলে বাজারে সবজির দাম উর্দ্ধমুখী।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বাজারে তিত করলা ও চিচিঙ্গা আসছে রাঙামাটি থেকে, কাকরোল ও মরিচ আসছে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই থেকে। বাকি সবজিগুলো ভারত ও দেশের অন্যান্য জেলা থেকে আসছে।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে রিয়াজউদ্দিন বাজার ও নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, তিত করলা ৭০, কাকরোল ৬০, ফুলকপি ৮০, বাঁধাকপি ৯০, মরিচ ১২০, চিচিঙ্গা ৬০, ঝিঙ্গা ৭০, আলু ২৫ ও টমেটো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, উত্তরবঙ্গে প্রায় উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সবজির সরবরাহ কমেছে। বর্তমানে আসা সবজির মধ্যে বেশিরভাগই নওগাঁ, যশোর ও ভারত থেকে আসা। তাই যাতায়াত খরচ বেশি পড়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

দূর-দূরান্ত থেকে আসা সবজির দামে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী সদুত্তর দিতে পারেননি।   কেউ কেউ বলেছেন, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি আসলেও চাহিদা বেশি থাকায় এসব সবজির দাম কমেনি।

রিয়াজউদ্দিন বাজারে মেম্বার বাণিজ্যালয়ের পাইকারি ব্যবসায়ী মাহমুদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘নওগাঁ ও যশোর থেকে মরিচগুলো এনেছি। যাতায়াত খরচ বেশি পড়েছে তাই পাইকারিতে বিক্রি করছি ৮০ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে ১২০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। ’

পাশেই আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মরিচ এনেছেন বিক্রির জন্য। কিন্তু তিনিও দাম নিচ্ছেন একই। অথচ যাতায়াত খরচ না থাকায় তার মরিচের দাম অনেক কম থাকার কথা।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘যারা অন্য জেলা থেকে মরিচ এনেছেন তাদের দামে বিক্রি না করে কম দামে বিক্রি করলে সিন্ডিকেট আমাকে ধরবে। এখানে অনেকেই স্থানীয়ভাবে তিত করলা, চিচিঙ্গা এনে বাইরে থেকে এনেছে বলে রশিদ তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করছে। ’

পাশেই তিত করলা ও চিচিঙ্গা পাইকারিতে বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী আবুল কাশেম। তিনি এগুলো এনেছেন রাঙামাটি ও মিরসরাই থেকে। তিনি বলেন, ‘সবজি স্থানীয় হোক আর বাইরের হোক বাজারে চলমান দামেই বিক্রি করতে হয়। ’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারে রাঙামাটি, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই থেকে প্রচুর সবজি আসছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ীর কারণে বন্যার অজুহাত দিয়ে বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭

জেইউ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।