ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্যার পানি সংরক্ষণে ৬ একরের জলাধার স্থাপনে সিডিএ

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
বন্যার পানি সংরক্ষণে ৬ একরের জলাধার স্থাপনে সিডিএ বন্যা ও জলাবদ্ধতার চিত্র (ফাইল ফটো)

চট্টগ্রাম: নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেয়া ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার সর্ববৃহৎ প্রকল্পে বন্যার পানি সংরক্ষণে ৬ একরের তিনটি জলাধার স্থাপন করা হবে। জলাধার স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে এসববাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্পবাস্তবায়িত হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘নগরীর ৩৬টি খাল পরিকল্পিতভাবে পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণই এ প্রকল্পটিরমূখ্য উদ্দেশ্য। এ লক্ষে বন্যার পানি সংরক্ষণের জন্য ২ একরের ৩টি জলাধার স্থাপন করা হবে।

যেখানে প্রচুর পরিমাণে পানি সংরক্ষণ করা যাবে। খালে নেমে আসা পাহাড়ের বারু সংরক্ষণের জন্য ৪২টি সিল্ট স্ট্র্যাপ স্থাপন করা হবে। খালেরপাড়ে ১৫ ফুট চওড়া ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হবে। যাতে অনায়াসে স্কেলেটর গিয়ে খালের ময়লা পরিস্কার করতে পারে। এ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া হয়েছে নানান পরিকল্পনা। ’

তিনি আরও বলেন, চাকতাই থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত ১২টি খাল রয়েছে। বৃষ্টি এবং জোয়ার আসলেই যে বারটি খাল দিয়ে চাকতাই, খাতুনগঞ্জে পানি ডুকে পড়ে। এ প্রকল্পে সকলের প্রস্তাব অনুযায়ী খালের মুখে স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা হবে। যাতে আর পানি ঢুকতে না পারে। এ প্রকল্পের লে-আউট শেষ এখন ডিজাইনের কাজ চলছে। জিডাইনের পরেই টেন্ডারে গিয়ে নভেম্বরের দিকে কাজ শুরু হবে।

সিডিএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস, বিদেশী বিনিয়োগকেউৎসাহিত করা, শহরের যানযট কমাতে, পর্যটন শিল্পের বিকাশে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ছালাম।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ প্রকল্পে নগরীর ৩৬টি খালের ৫ লাখ ২৮ হাজার২১৪ ঘনমিটার মাটি খননে ২৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং ৪ লাখ ২০হাজার ঘনমিটার কাদা অপসারণে ২৮ কোটি৮৫ লাখ ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রায় ১০৭ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৭২৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ৮৫দশমিক ৬৮ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য ৩১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ৩০২ কিলোমিটার স্থিত রোডসাইট ড্রেন পরিষ্কার ও মেরামতের জন্য ৬০ কোটি ৪০ লাখ, ১৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার স্থিত রোড সাইড ড্রেনসম্প্রসারণে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

৬টি আরসিসি কালভার্ট প্রতিস্থাপনে ৭ কোটি ২০ লাখ, ৫টি টাইডাল রেগুলেটর ৮৪ কোটি ৭৫ লাখ, ১২টি পাম্পসস্থাপনে ৩২ কোটি ৬ লাখ, ৪২টি সিল্ট স্ট্র্যাম্প স্থাপনে ২৯ কোটি ৪০ লাখ, ১০ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার নতুনসাইড ড্রেন নির্মাণে ১৭ কোটি ২২ লাখ, ২০০টি ক্রস ড্রেন কালভার্ট নির্মাণ ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকাধরা হয়েছে। ২০০০টি বৈদ্যুতিক পুল স্থানান্তরে ২ কোটি, ৮৮০টি স্ট্রিট লাইট স্থাপনে ৪ কোটি এবং ৯২টি ইউটিলিটি স্থানান্তরে১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি খাত।

নগরীর মহেশখাল, ডোমখালী খাল ও মোহরায় জলাধারের স্থাপনের জন্য পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালকও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ চেয়ারম্যানের তত্বাবধানে চট্টগ্রাম ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশনের সাথে আলাপ চলছে। সমন্বয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জলাবদ্ধতামুক্ত করা হবে। বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে নগরবাসীর যে দুর্ভোহে রয়েছে, তা থেকে মুক্তি পাবে। ’

বাংলাদেশ সময় : ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।