স্কুলের আঙ্গিনা ও ক্লাসরুমে পানি জমে থাকায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী যেমনি দুর্ভোগে রয়েছে তেমনি ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে আতংকে থাকেন ইছানগর এলাকার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো অভিভাবক।
তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্ষা মৌসুম বৃষ্টি হলেই স্কুলের ক্লাসরুমে পানি ঢুকে পড়ে।
রেবেকা সুলতানা নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাংলানিউজকে জানান, অনেকটা আতংকের মধ্যে ছেলেকে স্কুলে পাঠাই।
ইছানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামীম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টি হলেই ক্লাসরুমে হাটু পরিমাণ পানি উঠে যায়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম আসলে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। ক্লাসরুমে পানি উঠার কারণে আজ ৫ম শ্রেণির চলমান ১ম সাময়িকের গণিত পরীক্ষা স্থগিত করেছি। এ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১২৯ জন। অন্য শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে আজ খুব কষ্টের মাধ্যমে। এক টেবিলে বসানো হয়েছে ৫ জন। এরপরেও শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় দোতলায় ফ্লোরে বসিয়েও পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্কুলের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বেগম রোকেয়া ভবনের নিচতলায় ১ম, ২য় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসরুম। বৃষ্টি হলেই হাটু সমান পানি উঠে ক্লাস করা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয় ওই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দিতে হয়। স্কুলের আঙ্গিনার চেয়ে আশপাশের রাস্তা উচু হওয়ায় স্কুলে পানি ঢুকে পড়ে ১০ জন শিক্ষকসহ ১২০০ শিক্ষার্থীদের কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। পানি নিষ্কাষণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলের ভিতরে পানি জমে থাকে। এ জলাবদ্ধতা নিরসনসহ জরাজীর্ণ ভবনের কথা ইতিমধ্যে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ইউএনও ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের স্কুল পরিদর্শন করেছেন। ক্লাসরুমে জমে থাকা পানিগুলো স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহেদুর রহমানের কিনে দেওয়া সেচযন্ত্রের মাধ্যমে কমানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে স্কুলের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান প্রধান শিক্ষক।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহেদুর রহমান শাহেদ জানান, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ইছানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বৃষ্টি হলেই আশপাশের সব বৃষ্টির পানি ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে। স্কুলের আঙ্গিনার চেয়ে রাস্তা ও আশপাশের এলাকা উচু হওয়ায় ক্লাসরুমে পানি জমে থাকে। পানি উঠলেই সেচযন্ত্রের মাধ্যমে এসব পানি নিষ্কাষণ করা হয়। সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল ভবন যেটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি নিচু করে নির্মাণ করায় এ দূরাবস্থা হয়েছে। এলাকার হাজারোধিক শিক্ষার্থী চরম দুর্ভোগে রয়েছে। স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণসহ এসব বিষয় ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
এসবি/টিসি