সদ্যঘোষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন তিনি। এর আগে কেন্দ্র থেকে তাকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছিল।
রিজিয়া রেজা চৌধুরী জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে একাধিকবার জামায়াতের এমপি প্রার্থী ছিলেন মুমিনুল।
রিজিয়ার স্বামী সাংসদ নদভী জামায়াত ঘরানার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলা নদভী আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউণ্ডেশনের মাধ্যমে সারাদেশে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করে আওয়ামী লীগের নজর কাড়েন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর নদভী লোহাগাড়ায় এক অনুষ্ঠানে জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকার হয়েছিলেন। আবার আওয়ামী লীগের ভেতরেও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে নদভীর সমালোচনায় মুখর থাকেন দলটির একদল নেতাকর্মী।
রিজিয়াকে দলে পদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাফিয়া খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভাল। রিজিয়া কার মেয়ে, ওর আব্বা কি করেছে, না করেছে সেটা আমাদের বিবেচ্য নয়। তার স্বামী আওয়ামী লীগের এমপি। স্বামীর পরিচয়ে সে অনেক কাজ করেছে। নারীদের সংগঠিত করেছে। অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এতদিন ধরে আমাদের সঙ্গে লেগে আছে, তাকে একটা পদ দিয়েছি, তাতে অসুবিধা কি।
‘চট্টগ্রামের অনেকে দেখি ফেসবুকে যা ইচ্ছা তা-ই লিখছে। এটা ঠিক না। বাবার অন্যায়ের শাস্তি আমরা কেন মেয়েকে দেব। তার স্বামীর লাল পাসপোর্ট, তার নিজেরও লাল পাসপোর্ট। এরপরও যারা তাকে নিয়ে কথা বলছে, তারা আসলে পরনিন্দা, পরচর্চা করে একটি মেয়েকে উঠতে দিতে চায় না। আমার কথায় কেউ মনে কষ্ট পেলে আমি দু:খিত। ’ বলেন সাফিয়া
গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল অধিবেশনে ঘোষিত আংশিক কমিটিতে রিজিয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে পরবর্তীতে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তার নাম বাদ দেয়া হয়।
দক্ষিণ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় নেত্রীরাই উনার (রিজিয়া রেজা চৌধুরী) নাম ঘোষণা করেছিলেন। এটা আমাদের প্রস্তাবিত ছিল না। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আবার কেন্দ্র থেকেই বাদ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ দেয়ার বিষয়ে দক্ষিণ জেলা থেকে কোন প্রস্তাব গেছে কি না জানতে চাইলে চেমন আরা বলেন, আমরা কোন নাম পাঠাইনি। এটা কেন্দ্রীয় কমিটির এখতিয়ার। আর উনার স্বামী যেহেতু এমপি, সবার সঙ্গে উনার যোগাযোগ আছে। যে কোন জায়গায় উনার অবাধ যাতায়াতের সুযোগ আছে। এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার সহযোগী সংগঠনটির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করেন, যাতে কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে ৬৮ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে রিজিয়ার নাম।
গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এখন তুমুল সমালোচনা চলছে।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য রিজিয়া রেজা চৌধুরীর মোবাইলে বারবার চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফেসবুকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
আরডিজি/টিসি