এভাবে একে একে হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন নিষ্পাপ শিশুদের মুখে। সেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছে মায়ের মুখে, বাবার মুখে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৯ নম্বর শিশুস্বাস্থ্য ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ত্রিপুরা পাড়ার শিশুদের জন্য ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক, চমেক হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ত্রিপুরা পাড়ার যেসব শিশুকে আমরা চিকিৎসা করেছি তাদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা পান করে খালের পানি। তা-ও না ফুটিয়ে। তারা কখনো টিকা দেয়নি। তারা কখনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেননি। তারা খুবই হতদরিদ্র। বাচ্চারা যখন একে একে মারা যাচ্ছিল তখনও তারা ঝাঁড়ফুঁক আর কবিরাজি ওষুধ খাওয়াচ্ছিল। অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন ছিল তারা। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা কাজ পেলে খাবার জোটে, নয়তো উপোস থাকেন। এককথায় নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা।
চমেকের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পাড়ার ৫৪ জনকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। তাদের সব ওষুধপত্র, খাবার হাসপাতাল থেকে দিয়েছি। এমনকি তাদের বাবা-মা’র খাবার দাবারও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিয়েছে। এখন তাদের যদি আমরা আর্থিক সাহায্য করতে না পারি তবে বাড়ি ফিরে রোগশোক আবার বেড়ে যাবে। তাই নিজেরা চাঁদা দিয়েছি ৭০ হাজার টাকা। আবার হাসপাতালের পরিচালক বি. জেনারেল মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন দিচ্ছেন ৩০ হাজার টাকা। আমরা চাই এসব শিশুর প্রত্যেকের হাতে দেড়-দুই হাজার টাকা হলেও তুলে দিতে।
ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও শিশু চিকিৎসক সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. ঝুলন দাশ শর্মা শিশু চিকিৎসকদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের হাতে তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ মেসবাহুল হক, শিশু চিকিৎসক সমিতি চট্টগ্রামের সাবেক সহ সভাপতি ডা. আবুল কালাম আজাদ, চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বাসনা মুহুরী, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এনআই খান, ডা. সুভাষ চন্দ্র সূত্রধর প্রমুখ।
ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে আসার পর হামে আক্রান্ত কোনো শিশু আর মারা যায়নি। সবাই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। আশাকরি, আগামী কাল বুধবার থেকে কয়েকজন করে ছাড়পত্র দিতে পারব।
সীতাকুণ্ডের ছয় স্বাস্থ্যকর্মীকে শাস্তিমূলক বদলি
'মারাত্মক অপুষ্টির সঙ্গে সংক্রমণ, দুই শিশু ঝুঁকিতে'
অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ
সীতাকুণ্ডে অজ্ঞাত রোগে একদিনে চার শিশুর মৃত্যু
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এআর/টিসি