শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নান্দনিক চট্টগ্রামের নন্দিত নাগরিক’ শিরোনামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি স্বপন কুমার মল্লিক, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এই জন্য বিশাল অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। তবে টাকা কোনো সমস্যা না।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ৮ বছরে বাংলাদেশে অকল্পনীয় উন্নয়ন হয়েছে। যার প্রমাণ এই বছরে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা। বাজেট নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন কিন্তু সেই সরকারই বড় বাজেট ঘোষণা করে যার অর্থনীতি ভিত খুব শক্ত। প্রধানমন্ত্রীর সাহস আছে, যিনি বিশ্বব্যাংক থেকে কোনো টাকা নেননি। নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করছেন। আমরা এখনো বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা নিইনি। ’
‘বাংলাদেশের উন্নয়নের খবর এখন বিশ্বনেতাদের কাছেও পৌঁছে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যখন বাইরে যান তখন বিশ্বনেতারা জিজ্ঞেস করেন ‘হোয়াটস ইজ ইউর মিরাক্যাল? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬৪২ ডলার। সেই মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শুধু তাই নয় একসময় ৩ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল। সেটি এখন ১৬ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। ’
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেব। গ্যাস আমাদের প্রচুর। বিএনপি আমলে বিদেশি কোম্পানিকে গ্যাস রপ্তানি করবে বলেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার পর তা নাকচ করে দেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন, মাটির নিচে গ্যাস ছাড়া আরও মূল্যবান সম্পদ থাকতে পারে। এই জন্য তিনি বিদেশিদের কাছে গ্যা্স রপ্তানি করেননি।
২০৪১ সালে দেশে কোনো বেকার থাকবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যে বলেছে, বাংলাদেশ এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ। ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছতে পারব। তখন দেশে আর বেকার থাকবে না, দরিদ্র লোক থাকবে না। ’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যে ৬০টি উপজেলায় পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা করেছি। ’
পদ্মা সেতু সম্পর্কে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে শুধু রাস্তা হবে না। এই সেতু দিয়ে উপরে চলবে গাড়ি আর নিচে চলবে ট্রেন। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা-চট্টগ্রামে রেললাইনের উন্নতি করছি। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় দুই ঘণ্টায় কীভাবে যাওয়া যায় সেই চিন্তা করছি। সেই পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। হালিশহরে দুটি এলাকা নির্বাচন করেছি। যেগুলো ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে একটি শিশুপার্ক, দুটি মার্কেট ও দুটি সিনেপ্লেক্স করা হবে।
গণপূর্তমন্ত্রী চট্টগ্রামের আবাসন বঞ্চিত সাংবাদিকদের জন্য ৮ শতাংশ সুদহারে ব্যাংকঋণের মাধ্যমে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইউনুছ গণি চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক রোকসারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধূরী, নির্বাহী সদস্য ম শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৭
জেইউ/টিসি