ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে: নাছির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে: নাছির সিভিল সোসাইটি কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় বক্তব্য দেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

চট্টগ্রাম: ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে চট্টগ্রাম তলিয়ে যাওয়া বলাকে প্রপাগান্ডা উল্লেখ করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরীর মাত্র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তা-ও দু-তিন ঘণ্টার মধ্যে পানি নেমে যায়। এসব এলাকার মাত্র ৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হন। যেখানে নগরীতে ৬০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করছেন।

বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে নগর ভবনের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে জাইকা সাহায্যপুষ্ট সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পের অধীন সিভিল সোসাইটি কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।  

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে।

সিলট্রেশন হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়া হচ্ছে।
জোয়ারের সময় অতি বর্ষণ হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল নামছে। এর ফলে নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। ঢাকা শহরে তো সমুদ্র নেই তারপরও জলাবদ্ধতা সমস্যা রয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামকে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। অপরাজনীতি চলছে। অনেকের মায়াকান্না শুরু হয়েছে। সমন্বয়হীনতা কি ৩০ বছর ছিল না?  

মেয়র বলেন, আমাদের দেশে এখনো সস্তা রাজনীতি আছে। এটি নিষ্ঠুর বাস্তবতা। অনেক সময় অন্যায়ভাবে, অকারণে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এসবই চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতেই করা হচ্ছে।

অনেক কিছু দেখেও না দেখার ভান করছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আগের মেয়াদের মেয়রের আমলের গৃহকর বিষয়ে ১৩ হাজার আপত্তি আবেদন পড়ে ছিল। আমার মেয়াদে এসব নিষ্পত্তি করেছি। আমরা যখন নতুন করে অ্যাসেসমেন্ট শুরু করলাম চারজন মামলা করেছেন। ওই চারজনের বিষয়ে স্থগিতাদেশ আছে। আমরা আপিল করেছি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এককালীন হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে আসছে। নতুন অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী আমরা ‌ট্যাক্স নির্ধারণ করেছি। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষ আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে অফডকের কারণে তীব্র যানজট হচ্ছে ইপিজেড ও সল্টগোলা এলাকায়। বিগত দিনে অফডক থেকে তেমন ট্যাক্স পায়নি চসিক। এবার তাদের আয়ের ওপর অ্যাসেসমেন্ট হয়েছে। ট্যাক্স দেওযার সক্ষমতা তাদের আছে। কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া অনেক বেশি। লেডিস ক্লাবের ভাড়া আড়াই লাখ টাকা। আমরা কমিউনিটি সেন্টারগুলোর শ্রেণি বিন্যাস করে হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনব। নগরীতে ১০-১২ লাখ গরিব মানুষ আছেন। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি গরিবদের হোল্ডিং ট্যাক্স নেব না। যাদের আর্থিক অবস্থা নাজুক তাদের যথ বেশি সম্ভব ছাড় দেওয়া হবে। গরিবদের হোল্ডিং ট্যাক্সকে পুঁজি করে কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবে তা হতে দেব না।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাহফুজুল হক শাহের ‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে’ এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বন্দুকের গুলি আমাকে মারেন। মারতে থাকেন অসুবিধা নেই। আমি পাঁচ বছরের মেয়াদের মধ্যে কাজ করেই সব সমালোচনার জবাব দেব।    

সভায় আইইবির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ  হারুন, সহ সভাপতি এমএ রশিদ, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. মুজিবুল হক খান, স্থপতি সোহেল মাহমুদ শাকুর, চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী আব্বাস, মহিলা চেম্বারের পরিচালক রেখা আলম চৌধুরী, শামিমা হারুন লুবনা ও অ্যাডভোকেট মিলি চৌধুরী বক্তব্য দেন।

উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলোর নারী কাউন্সিলর, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব মো. আবুল হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।      

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।