ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মোনাজাতে উগ্রতা ছাপিয়ে শান্তির আকুতি

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৭ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭
মোনাজাতে উগ্রতা ছাপিয়ে শান্তির আকুতি জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ঈদ জামাত (ছবি: উজ্জল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

চট্টগ্রাম: ধর্মের নামে উগ্রবাদ থেকে বাংলাদেশ ও জনগণকে রক্ষা করে দেশে শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আকুতি জানিয়েছেন ঈদের নামাজে শরিক হওয়া মুসল্লিরা।

সোমবার (২৬ জুন) নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় শেষে মোনাজাতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ পরিহারের ডাক আসে।   এসময় খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরি বলেন, যারা অপরাধ করছে আল্লাহ আপনি তাদের সঠিক পথে নিয়ে আসুন।

  এসব যুবকেরা যাতে দেশের সম্পদে পরিণত হয়।     তারা যেন দেশপ্রেমিক হয়ে একজন সুযোগ্য সন্তান ও সুযোগ্য সম্পদে পরিণত হন।

নামাজ শুরুর আগে বয়ানেও খতিব বলেন, দ্বীনের কথা বলে যারা আত্মহত্যা করছে, যারা মানুষ হত্যা করছে তারা গোণাহগার।   এভাবে দ্বীনের খেদমত হয় না।   ইসলাম শান্তি ধর্ম।   অথচ কিছু যুবক ধর্মের ভুল ব্যাখা দিয়ে নিজেদের বিপথগামী করছে।   এটা নবী রসূলের পথ নয়।  

‘যেসব যুবকদের দেশের সম্পদে পরিণত হওয়ার কথা ছিল, তারা হয়ে যাচ্ছেন দেশের আপদ।   তাদের জন্য দেশের সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি, সম্ভাবনা বিনষ্ট হচ্ছে।   আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই, এই যুবকদের আপনি সুপথে আনুন।   তাদের দ্বীনের পথে আনুন। ’ বলেন খতিব

মোনাজাতে খতিব সরকার ও বিরোধী দলকে একত্রিত হয়ে দেশ পরিচালনার জন্য দোয়া করেন।   চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান হওয়া পর্যন্ত জনগণ যাতে ধৈর্য্যধারণ করতে পারে, সেজন্য দোয়া করেন।

‘সরকার এবং বিরোধীদল যাতে একত্রিত হয়ে দেশপ্রেমকে সামনে রেখে এই দেশের খেদমত করতে পারেন...।   আমরা যেন তাদের অনুসরণ করতে পারি।   আমাদের তওফিক দান করুন।

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান (ছবি: উজ্জল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বহু সমস্যা আছে।   এই সমস্যাগুলোকে সমাধানের জন্য মেয়র মহোদয়কে শক্তি দান করুন।   দেশের মানুষকে ধৈর্য্য ধারণ করার তওফিক দান করুন।   

বিনা অপরাধে জেলের জেল থেকে বন্দিরা যেন দ্রুত ছাড়া পেয়ে যান সেই দোয়াও করেন খতিব।

এছাড়া নামাজ শেষে মোনাজাতে খতিব প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারানো মানুষ এবং তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে যেসব সেনাসদস্য জীবন দিয়েছেন তাদের জন্য দোয়া করেন।  

তিনি বলেন, রাঙামাটি এবং অন্যান্য জেলায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়িতে আমাদের যেসব ভাইয়েরা পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে শাহাদাৎ বরণ করেছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করতে গিয়ে যেসব সেনাসদস্য জীবন দান করেছেন, আল্লাহ আপনি তাদের জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।  

খতিব আলাউদ্দীন আল কাদেরি যখন কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহর দরবারে প্রয়াত মা-বাবাসহ মুরব্বী এবং নিজেদের গুণাহ মাফ করার ফরিয়াদ জানাতে থাকেন তখন বদলে যায় ময়দানের পরিবেশ।  কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মুসল্লিরা।   হাজার হাজার মুসল্লীর সমস্বরে আমিন, আমিন ধ্বনি আর কান্নার রোলে বদলে যায় ভারি হয়ে উঠে ঈদগাহ ময়দানের পরিবেশ।   

ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি।  ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্তাবধানে নগরীতে এবার ১৬১টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।   চসিক, কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটি এবং এলাকাভিত্তিকসহ নগরীতে মোট ৪০৩টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭

আরডিজি/টিসি   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।