ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে লাখো মুসল্লির ঢল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৩ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭
জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে লাখো মুসল্লির ঢল জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে লাখো মুসল্লির ঢল (ছবি: উজ্জল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

চট্টগ্রাম: আষাঢ়ের রোদেলা সকাল।  হালকা গরম।  স্বস্তিদায়ক আবহাওয়ার মধ্যে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।  সোমবার (২৬ জুন) ঈদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে।  দুই দফা নামাজে এই ময়দানে সমাগম ঘটেছে লাখো মুসল্লির।

সকাল ৮টায় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে প্রথম ঈদ জামাতে ইমামতি করেন ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরি।   ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য এক কাতারে দাঁড়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধারণ মানুষ।

 

প্রথম জামাতে ময়দান ছাপিয়ে মুসল্লিদের ভিড় ছিল সড়কেও।   অনেকে ময়দানের দুই মূল ফটকের সামনের সড়কে বসে নামাজ আদায় করেছেন।

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে দ্বিতীয় জামাতে ইমামিত করেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম আল্লামা আলহাজ্ব মাওলানা নূর মোহাম্মদ সিদ্দিকী।  

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ। তিনটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হয়।   মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর মুসল্লিদের ময়দানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে।

জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো.নাসির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্তাবধানে নগরীতে এবার ১৬১টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।   চসিক, কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটি এবং এলাকাভিত্তিকসহ নগরীতে মোট ৪০৩টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।  

প্রথম জামাতে ঈদের নামাজ শেষে খতিব দেশের মানুষের সুখ ও শান্তি কামনায় আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান। মোনাজাতে খতিব দেশ ও সীমান্ত এবং মানুষের জানমাল হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান।   

মোনাজাতে ইমাম বলেন, আল্লাহ, আপনি আমাদের এবাদত বন্দেগি কবুল করুন।   এই জামাতের কেউ যেন আপনার রহমত থেকে বঞ্চিত না হয়।   বিশ্বের সকল মুসলমানের প্রতি আপনি রহমত নাজিল করুন।

তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের মধ্যে অনেকে মা-বাবাকে হারিয়েছেন।   আমাদের মা-বাবার কবরকে আপনি জান্নাতের বাগানে পরিণত করুন।   আমাদের মা-বাবার প্রতি রহমত নাজিল করুন।   আমাদের মা-বাবার সব গুণাহ আপনি মাফ করে দিন।  

টানা ৩২ বছর ধরে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে ঈদের নামাজে ইমামতি করা বরেণ্য আলেম জালালউদ্দীন আল কাদেরি কয়েক মাস আগে মারা গেছেন।   মোনাজাতে জালালউদ্দীনের জন্য দোয়া করা হয়।  

নগরীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে।   চসিকের তত্ত্বাবধানে বাকলিয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন স্টেডিয়াম, লালদিঘী শাহি জামে মসজিদ, জালালাবাদ আরেফিননগর সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, হজরত শেখ ফরিদ চশমা ঈদগাহ ময়দান, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদে, মা আয়েশা সিদ্দিকা চসিক জামে মসজিদে (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামসংলগ্ন) ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত ও অন্যান্য ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রত্যেক জামাতে নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন।   অনেকে পিতা-মাতাসহ মুরব্বীদের কবর জিয়ারত করে ফিরেছেন বাসায়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭

আরডিজি/টিসি   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।