ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দরনগরীতে ঈদ নিরাপত্তায় ৫০০০ পুলিশ-র‌্যাব

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
বন্দরনগরীতে ঈদ নিরাপত্তায় ৫০০০ পুলিশ-র‌্যাব ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া নগরীর বাসা-বাড়িতে চুরি-ডাকাতি ঠেকানো এবং ঈদ জামাতের নিরাপত্তার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।  ঈদে নগরীর নিরাপত্তায় থাকছে সাড়ে চার হাজার পুলিশ।  এর মধ্যে তিন হাজার থানা ও ফাঁড়ির নিয়মিত পুলিশ এবং দেড় হাজার অতিরিক্ত পুলিশ।  এর বাইরে র‌্যাবের ৫০০ সদস্য থাকবে টহল ডিউটিতে।

সূত্রমতে, নগরীর অলি-গলি এবং তালিকা অনুযায়ী ২০৫টি আবাসিক এলাকায় টহল জোরদার থাকবে।   পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দিকে কড়া নজর থাকবে পুলিশের।

 

জানতে চাইলে অপরাধ বিভাগে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে থাকা নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, আবাসিক এলাকার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।   সেখানে সার্বক্ষণিক মোটরসাইকেলে করে টহল টিম থাকবে।

  পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে।   এর বাইরে ঈদ জামাতেও আমাদের বিশেষ নিরাপত্তা থাকবে।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (বিশেষ শাখা) কাজেমুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল ফিতরের আগের দিন অর্থাৎ চাঁদ রাত পর্যন্ত আমাদের এক ধরনের পরিকল্পনা আছে।   আর ঈদুল ফিতর ও তারপর দুইদিন পর্যন্ত আমরা আরেক ধরনের পরিকল্পনা করেছি যেটাকে ঈদের নিরাপত্তা বলছি। এই সময়টাতে আমরা দেড় হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করছি।  থানা-ফাঁড়ি মিলিয়ে নগরীতে পুলিশের মোট সাড়ে চার হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।

রিজার্ভ পুলিশ, এসএএফ, পিওএম, এপিবিএন, বন্দর পুলিশ লাইন, শিল্প পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ থেকে অতিরিক্ত সদস্য আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাজেমুর রশীদ।

পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, মধ্য রমজান থেকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন দুই শিফটে অতিরিক্ত ১১০২ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।   এর মধ্যে অধিকাংশই মার্কেট-শপিংমলের সামনে দায়িত্বরত আছেন।  

তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে বাস ও রেলস্টেশন এবং নগরীর প্রবেশপথে দায়িত্বরত আছেন পুলিশ সদস্যরা।  নগরীতে ফেরত আসা মানুষের নিরাপত্তায় ঈদের পরদিন থেকে একইভাবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

সূত্রমতে, ঈদের দিন সকালে পুরো নগরীতে জামাতের নিরাপত্তায় থাকবে সাত’শ পুলিশ।   নগরীর সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে দায়িত্বরত থাকবেন ১১০ জন।   আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে থাকবেন ৩০ জন।   এভাবে বড় বড় জামাতগুলোতে ৩০-৪০ জন করে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন।   সর্বনিম্ন ৪ জন সদস্য ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় থাকছে।

ঈদের নামাজ আদায়ের পর সেখানে মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্যরা নগরজুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।  স্থায়ী পিকেট, ফুট পেট্রল এবং হোন্ডা মোবাইল ও টহল টিম এই চারভাগে ভাগ করা হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।   এর বাইরে নগর গোয়েন্দা পুলিশের দুই জোনে চারটি বিশেষ টিম থাকছে।  সার্বিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

সূত্রমতে, সব আবাসিক এলাকার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য বলা হয়েছে।   সংশ্লিষ্ট জোনের উপ-কমিশনার আবাসিক এলাকার নিরাপত্তার বিষয় তদারক করবেন। পাড়া-মহল্লায় চুরি-ডাকাতি ও সামাজিক অপরাধ রোধে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঈদের ছুটিতে সংশ্লিষ্ট আবাসিক এলাকাগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের চাহিদা এবং পরামর্শের ভিত্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আর আবাসিক এলাকার মধ্যে বিভিন্ন ভবনে কিংবা বাসার ফটকে গিয়ে তাৎক্ষণিক তল্লাশি করাসহ সার্বিক বিষয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করবেন।

পুলিশের মতে, নগরীর পাড়া-মহল্লাগুলো আবাসিক এলাকার মত খালি হয়না। তবে এসময় পাড়া-মহল্লায় কিছু সামাজিক অপরাধ ঘটে। আবাসিক এলাকাগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার পাশাপাশি পাড়া-মহল্লাগুলোর নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ঈদের ছুটির সময় পাড়া-মহল্লায় টহল বাড়ানোর জন্য ওসিদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এজন্য থানায় ওসিদের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশও দেয়া হয়েছে।

রমজানের মত ঈদেও পুলিশ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টকে তিন ভাগে চিহ্নিত করেছে।  এর মধ্যে নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর পয়েন্ট আছে কমপক্ষে ৩০টি। বাকি আরও কমপক্ষে ৫০টি পয়েন্ট আছে যেগুলো শুধু গুরুত্বপূর্ণ এবং মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে শতাধিক আলাদা টিম কাজ করবে।

র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পাঁচশ সদস্য ঈদুর ফিতরের দিন সকালে ঈদ জামাতের আশপাশে থাকবে।   ঈদের নামা শেষে তারা পুরো নগরীতে টহল দেবে।   যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ঘণ্টা, জুন ২৪,২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad