ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঙালির মুক্তির জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
বাঙালির মুক্তির জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল নগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেনসহ অন্যরা।

চট্টগ্রাম: খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, ১৯৪৭ সালে বাঙালিদের একচেটিয়া ভোটে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল।

কিন্তু অল্প কয়েকদিনের মাথায় তৎকালীন বাঙালির রাজনৈতিক নেতৃত্ব উপলব্ধি করেন যে, পাকিস্তান নামক অবৈজ্ঞানিক রাষ্ট্র কাঠামোয় বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব নয় এবং এ লক্ষ্য অর্জনে বাঙালিদের শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে তোলার তাগিদ থেকেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজগার্ডেনে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়।

তিনি বলেন, ওই সময়ে মাওলানা ভাসানী সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক ও কারাবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।

১৯৬৩ সালে এক কঠিন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের হাল ধরেন এবং তিনি সভাপতি তাজউদ্দিন আহমেদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ধাপে ধাপে নানান ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগকে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত করেন।

শুক্রবার (২৩ জুন) চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর শাখা আয়োজিত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সেন বলেন, আজকের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ফসল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের ইতিহাসের উল্টোযাত্রা ঘটানো হয়।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে এই বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে ধাবিত করছেন।

সভাপতির বক্তব্য নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, একটি কঠিন সময়ে আজ থেকে ৬৮ বছর আগে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ অনেক অনেক কঠিন ও দুর্গম পথ অতিক্রম করে সামনে দিকের দিকে এগিয়েছে। আওয়ামীলীগ কঠিনেরে ভালোবাসে এবং তাকে জয় করতে জানে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে হবে। ভালো প্রার্থী যাতে নৌকা প্রতীক পেতে পারেন এবং নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করতে খুঁটিনাটি জরিপ আমরা শুরু করেছি। তাই দলের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন সাপেক্ষে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার বিজয় ছিনিয়ে আনতে কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও নির্বাহী সদস্য যারা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন তারা দলের সভায় আসেন না, দলের কর্মসূচিতে অংশ নেন না। দলের সাধারণ স্তরের নেতা-কর্মীদের সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তারা যদি পদ-পদবি ছেড়ে না দেন তাহলে মহানগর আওয়ামী লীগ তাদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করবে।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে অনেক কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। আমরা এখনো কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছি। তাই আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে ঐক্যই আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের সুদৃঢ় শক্তি। আমাদের মধ্যে মত ভিন্নতা ও মত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের নীতি ও আদর্শ এক এবং নেত্রী একজনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈমুদ্দিন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, উপ-প্রচার সম্পাদক শহিদুল আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল আলম, সদরঘাট থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী, বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সভাপতি কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন।

এর আগে সকালে দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তলন করা হয়।                   

বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।