ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খেলনার লোভ দেখিয়ে ডেকে নেয় সালমাকে, দ্বিতীয় ঘাতকও ধরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
খেলনার লোভ দেখিয়ে ডেকে নেয় সালমাকে, দ্বিতীয় ঘাতকও ধরা নৃশংসভাবে খুনের শিকার সালমার এই ছবিটা এখন কেবল স্মৃতি

চট্টগ্রাম: নগরীতে সালমা আক্তার নামে এক শিশুকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় জড়িত দ্বিতীয় ঘাতক জীবনকেও (২০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার রেললাইন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি দল।

গ্রেফতার জীবন দুপুরে মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ পারভেজের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।  জবানবন্দিতে সেও ধর্ষণের পর সালমাকে খুন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে।

গত ১৫ জুন ভোরে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলার নঈমিয়া ভবন নামে একটি মার্কেটের তিনতলায় ময়লার স্তূপে কাঠের বাক্সভর্তি সালমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করেছিল, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

 

এ ঘটনায় বুধবার রাতে ইমন হাসান নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে শিশুটিকে তারা ‍দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ইমনের স্বীকারোক্তির পর আরেক খুনী জীবনকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ। অবশেষে তাকেও গ্রেফতার করতে পেরেছে তারা।  ধর্ষণের ঘটনাস্থল নঈমিয়া ভবনের নিচতলায় জোয়াং করপোরেশন নামে একটি সেনিটারি দোকানের কর্মচারি জীবন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়ালিউদ্দিন আকবর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সালমার দ্বিতীয় ঘাতক জীবনকেও গ্রেফতার করতে পেরেছি।  আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সেও সালমাকে ধর্ষণের পর খুনের কথা স্বীকার করেছে। জবানবন্দি শেষে জীবনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

এদিকে আদালত সূত্র জানায়, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জীবন জানায়, মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে সালমার সঙ্গে তার কথা হতো।   এই পরিচয়ের সূত্র ধরে ১৩ জুন দুপুর ১২টার দিকে জীবন খেলনা দেবার কথা বলে সালমাকে ডাকে।  সালমা খেলনা কোথায় জানতে চাইলে জীবন তাকে তিনতলার গোডাউনে আছে বলে জানায়। পরে সালমাকে সেখানের পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে যায় জীবন।  সেখানে আগে থেকে ছিল ইমন।  নির্জন ওই স্থানে প্রথমে জীবন সালমাকে ধর্ষণ করে।  এরপর ইমন তাকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করে।

সূত্র আরও জানায়, জীবন জবানবন্দিতে স্বীকার করে ধর্ষণের বিষয়টি সালমা তার বাবা ও মামাকে জানিয়ে দেবে বলার পরেই তাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় সে ও ইমন। ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তারা সালমার মাথার হিজাব গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।  

পুলিশ জানায়, হত্যকাণ্ডের পর জীবন ওই ভবনের নিচতলায় দোকানে চলে যায়।   ইমন স্বাভাবিকভাবে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে চলে যায়।   গভীর রাতে আবারও দুজন এসে সালমার মরদেহ একটি কার্টনে ভরে ময়লার ভেতরে ফেলে যায়।  

সালমার মরদেহ উদ্ধারের পর তার বাবা পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।  স্থানীয় একটি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী সালমার বয়স ৯ বছর বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।