ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কথা কাটাকাটির জেরে কিশোর খুন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
কথা কাটাকাটির জেরে কিশোর খুন

চট্টগ্রাম: তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার বেলতলা এলাকায় নাজমুল হোসেন সাগর (১৪) নামে এক কিশোর খুন হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক বিপ্লব চন্দ নন্দীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেলতলার চন্দননগর এলাকায় মিঠু টেইলার্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  বাকবিতণ্ড‍ার একপর্যায়ে টেইলার্সের দর্জি বিপ্লব ক্ষুব্ধ হয়ে কাঁচি ছুঁড়ে মারলে সাগরের পিঠে লেগে মারাত্মক জখম হয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় সাগরকে প্রথমে সাউদার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে রাত পৌনে একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

 বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকাল পৌনে ছয়টার দিকে চিকিৎসক সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাগরের বাবা নজরুল ইসলাম পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক।   বরগুনার তালতলায় তাদের গ্রামের বাড়ি। নগরীতে চন্দননগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো তারা।   সাগর চৌধুরীনগর ব্রাইটসান কিন্ডারগার্টেন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বাংলানিউজকে জানান, বিপ্লবের দর্জি দোকান মিঠু টেইলার্সের সামনে দাঁড়িয়ে সবসময় আড্ডা দিত সাগর।   বিপ্লবের সঙ্গেও সবসময় ঠাট্টা-মশকরা করতো।   অনেক সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিপ্লবকে ক্ষেপিয়ে মজা নিত।   বুধবার রাতেও বিপ্লবকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষেপাচ্ছিল সাগর।   এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দোকানের ভেতর থেকে বিপ্লব রাস্তার ওপর থাকা সাগরের দিকে কাঁচি ছুঁড়ে মারে।  কাঁচিটি সাগরের পিঠে লেগে মারাত্মক জখম হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় সাগরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সকালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে আছেন নজরুল ইসলাম।   তার দাবি, চিকিৎসা পেলে ছেলে বাঁচতো।

বিপ্লবের আঘাতের থেকেও ডাক্তারদের প্রতি অভিযোগ বেশি তার। ডাক্তারদের অবহেলার কারণে ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, রাত পৌনে একটায় ছেলেকে নিয়ে চমেক হাসপাতালে গেলাম।   তারা আমার ছেলেকে শুধু একটা স্যালাইন দিয়ে রাখলো।   সারা রাত কোন ডাক্তার আমার ছেলেকে দেখেনি। রাত তিনটায় স্যালাইন শেষ হয়ে গেলে ওয়ার্ডে থাকা নার্সকে ডাকলাম।   বললাম, স্যালাইন শেষ হয়ে গেছে।   আমার ছেলের রক্ত বের হয়ে হচ্ছে। রক্ত দেওয়া লাগবে।   ডাক্তারকে ডাকেন।  আমার ছেলে মারা যাচ্ছে। নার্স বললেন, আপনার ছেলে মারা গেলে আমি কি করবো। দেখছেন না কোন ডাক্তার নেই।

‘সারা রাত হাসপাতালে কোন ডাক্তার ছিল না।   যদি ডাক্তাররা চিকিৎসা করতো তাহলে আমার ছেলে বাঁচতো। চিকিৎসা না পেয়েই সে মরে গেছে।   এখন আমি কি নিয়ে বাঁচবো। ’

এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন বায়েজিদের ওসি মহসিন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭

আরডিজি/আইএসএ/টিসি  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।