ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মার্কেটের সামনে দুর্ভোগের যানজট

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
মার্কেটের সামনে দুর্ভোগের যানজট মার্কেটের সামনে দুর্ভোগের যানজট (ছবি: উজ্জল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

চট্টগ্রাম: ‘স্যার, নিউমার্কেটের দিকে যেতে ইচ্ছা করে না।  একবার নিউমার্কেটের রাস্তায় ঢুকে গেলে দুই ঘণ্টার আগে বের হওয়া যায় না।  এত জ্যাম আর ভাল লাগে না।  গাড়ি চালিয়ে শান্তি ‍পাই না। ’

এই আক্ষেপ সিএনজি অটোরিকশা চালক মো.নূরুন্নবীর।   গভীর রাতেও নগরীর নিউমার্কেটের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় যানজটের এমন চিত্র ফুটে উঠেছে অটোরিকশা চালকের কথায়।

আক্ষেপ শুধু গাড়িচালকের নয়, মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ আর বিরক্তি আরও বেশি।  

নগরীর গোসাইলডাঙ্গা থেকে প্রাইভেট কারে বুধবার গভীর রাতে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছেন গৃহবধূ হোসনে আরা তানিয়া।

  যানজটে পড়ে বিরক্ত তানিয়া নিউমার্কেটের ফটকে দাঁড়িয়ে পুলিশের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

‘আগ্রাবাদের বাদামতল মোড়ে জ্যাম, চৌমুহনীর আগে ফায়ার সার্ভিসের সামনে জ্যাম, কদমতলী ফ্লাইওভারের নিচ থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত জ্যাম।   কত আর সহ্য হয়।   নিউমার্কেটের সামনে এসে গাড়ি পার্ক করে নামতে সময় লেগেছে আধাঘণ্টা। ’ বলেন তানিয়া

বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নন্দনকানন রাইফেল ক্লাবের সামনে থেকে নিউমার্কেট হয়ে কোতয়ালির মোড়, অপরদিকে কদমতলী ফ্লাইওভার পর্যন্ত যানজট লেগে আছে।   সড়কের একপাশ জুড়ে রাখা হয়েছে প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা, মিনিবাস।   সড়কের বাকি অংশে মার্কেটে আসা মানুষের হাঁটাচলা।   স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলতে না পেরে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

শুধু নিউমার্কেট নয়, নগরীর প্রবর্তক মোড়, মিমি সুপার মার্কেটের সামনে থেকে ষোলশহর দুই নম্বর গেইট, জিইসি মোড় সানম্যার ওশান সিটির সামনেও দেখা গেছে গাড়ির জটলা।   নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মোড় এবং মার্কেটকেন্দ্রিক জটলা দেখা গেছে গভীর রাতেও।  

হকার মার্কেটের দোকানি বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ইফতারির সময় এবং এরপর ঘণ্টাখানেক জ্যাম একটু কম থাকে।   এরপর যে শুরু হয় রাত ১টা পর্যন্ত থাকে।   তারপর আস্তে আস্তে কমতে থাকে।

রমজানের আগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার যানজট নিরসনে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, গত বছরের  তুলনায় এবার পুলিশ নগরবাসীকে ৩০ শতাংশ বেশি স্বস্তি দেবে।   কিন্তু ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতারা ততবেশি বাজারমুখী হচ্ছেন।  গাড়ির চাপে যানজট এখন অসহনীয় পর্যায়ে যাচ্ছে।

সিএমপির পক্ষ থেকে সড়কের ‍বাম পাশ দিয়ে গাড়ি চালাতে উদ্বুদ্ধ করা, সচেতনতা সৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামানো, মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ে শৃঙ্খলা আনতে প্রথমবারের মতো পাঁচটি মার্কেটের সামনে ডিজিটাল ডিসপ্লে রাখা, ৪’শ কমিউনিটি পুলিশকে মার্কেটকেন্দ্রিক যানজট নিরসনে নিয়োজিত করাসহ কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ রমজান উপলক্ষে নেয়া হয়েছে।   তবে এসব উদ্যোগের সুফল খুব বেশি আসেনি।

রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার মোড়ে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো, মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিং এবং চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে পারেনি পুলিশ।   এছাড়া রাতের বেলা ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দখল করে হকারদের বসতে দেখা গেছে।   এতে মার্কেটকেন্দ্রিক যানজট অন্যান্য বছরের তুলনায় ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭

আরডিজি/টিসি   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।