ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফুটপাতের ঈদবাজারে রীতিমতো ঠেলাঠেলি, যুদ্ধ

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
ফুটপাতের ঈদবাজারে রীতিমতো ঠেলাঠেলি, যুদ্ধ জমজমাট ফুটপাতের ঈদবাজার। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: কম দামের বর্ণিল সব পোশাক তরে তরে সাজানো। নারী-শিশুসহ নানা বয়সী ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। কোথাও আবার রীতিমতো ঠেলাঠেলি, যুদ্ধ। হকারদের হাঁকডাক। সব মিলে সরগরম নিম্নবিত্তের ভরসা ফুটপাতের ঈদবাজার।

নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন জুবিলি রোড, স্টেশন রোড, কেসি দে রোড, লালদীঘি মিলে কয়েক বর্গকিলোমিটারজুড়ে ফুটপাত, নালা, সড়কের অংশবিশেষে পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, শাড়ি, থ্রিপিস, ফ্রক, বাচ্চাদের শার্ট-প্যান্ট, ঘড়ি, জুতা, বেল্ট, গেঞ্জি, টেবিল ক্লথ, তোয়ালে, গৃহস্থালি সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসই আছে ফুটপাতের বাজারে।

কেউ কেউ আবার টুপি, গেঞ্জি, হ্যাংগারসহ ছোটখাটো জিনিস হেঁটে হেঁটে ফেরি করছেন।

একসময় হকারদের নেতা ছিলেন দাবি করে মো. বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বললেন, সাধারণ মার্কেটে যেসব পণ্য পাওয়া যায় ফুটপাতেও তা আছে।

কোয়ালিটির ক্ষেত্রে একটু উনিশ-বিশ হবে এই আরকি। হকারদের খরচ কম তাই কম দামে কম লাভে বিক্রি করতে পারছে। দোকানদার দোকান ভাড়া, লাইট, সেলসম্যান ইত্যাদির কারণে পারছে না।

জলসা সিনেমা মার্কেটের সামনে জুতার হকারদেরই আধিপত্য বেশি। সোলায়মান নামে একজন বিক্রেতা জানালেন, ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় ভালো ভালো সব কেডস, সু বিক্রি করছি। স্যান্ডেল পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।

দারুল ফজল মার্কেটের বিপরীতে সাতকানিয়ার মো. লোকমান হেঁটে হেঁটেই বিক্রি করছিল নতুন টুপি। বললেন, ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দামের টুপি আছে আমার কাছে। শবে কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে টুপি বিক্রি বাড়ছে।

মিউনিসিপ্যাল স্কুলের সামনের ফুটপাতটি এখন আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছে। প্রচুর বাচ্চাদের পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। সেখানে পছন্দের পোশাক বেছে নিচ্ছিলেন পোশাককর্মী আনোয়ারা বেগম। তিনি জানান, শুক্রবারের ট্রেনে দেশের বাড়ি যাবেন। বৃহস্পতিবার রাতে শবে কদরের নামাজ রয়েছে। তাই বুধবারই বাড়ির সবার জন্য কেনাকাটা সেরে ফেলছেন।  

জমজমাট ফুটপাতের ঈদবাজার।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গরিবদের জন্য ফুটপাতের বাজারই ভরসা। মার্কেটে তো ম্যালা দাম। ’

শুধু নিউমার্কেটের আশপাশের এলাকায় নয়, হকারদের বসতে দেখা গেছে আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোড, বাদামতল, বহদ্দারহাট, জিইসির জাকির হোসেন সড়ক, অলংকার মোড়, ছোটপুল, অক্সিজেন মোড়, দু্ই নম্বরে গেট, বায়েজিদ, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, সিইপিজেড, বন্দরটিলাসহ বিভিন্ন স্থানে।  

সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের নেতা মো. মিরণ হোসেন মিলন বাংলানিউজকে জানান, চট্টগ্রামে প্রায় ২০ হাজার হকার আছে। এর মধ্যে স্টেশন রোড, জিপিও, জুবিলি রোড ও আশপাশের এলাকাতেই আছে ৬-৭ হাজার। তবে এবার ভারীবৃষ্টিপাতের কারণে হকারদের ব্যবসা আশানুরূপ হচ্ছে না।

ব্যবসা না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, একটা সময় ছিল টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউমার্কেটই ছিল ঈদবাজারের কেন্দ্রবিন্দু। এখন তো শত শত মার্কেট, হাজার হাজার শোরুম। উপজেলা, পৌরসভা সদরেও অনেক মার্কেট, অনেক হকার। তাই বিক্রিবাট্টা কমে যাচ্ছে ক্রমে।   

বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।