রাইমা নামে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, এসএসসিতে ৪.৪৩ পেয়ে ব্যবসায় শিক্ষাবিভাগ থেকে পাস করি। পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণির ভর্তির জন্য স্থানীয় একটি কম্পিউটারেরদোকান থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন করি।
পরবর্তীতে সিটি কলেজে ভর্তি হতে না পেরে এ বিষয়ে জানতে সরাসরি শিক্ষাবোর্ডে চলে আসেনরাইমা। সঙ্গে রয়েছেন তার বাবাও।
বুধবার (২০ জুন) দুপুর ১টা বেজে ২০ মিনিট। হাতে ভর্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েশিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখায় আসেন রাইমা ও তার বাবা।
রাইমা কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে বিড়ম্বনার বিষয়টি বোর্ডের কলেজ পরিদর্শককে বুঝিয়ে বলেন।
তখন কলেজ পরিদর্শক রাইমার কাগজপত্র দেখভাল ও যাচাই-বাছাই করে দেখলেন রাইমাঅনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করার সময় কোটার অপশনে শিক্ষা কোটা (ইকিউ) দিয়েছিল। বিধায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তির নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাকোটার কাগজপত্র দাখিল করতে বলেছেরাইমাকে।
পরে রাইমা বলেন, অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ করার সময় অসতর্কতাবশত কোটায় সিলেকশন দেওয়া হয়েছিল। তাই কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে এ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে রাইমাকে।
শুধু রাইমা নয়, অসতর্কার কারণে এরুপ ভর্তি ফরম পূরণ করে আবেদন জমা দেওয়ায়শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।
বুধবার (২১ জুন) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ বিড়ম্বনা সম্পর্কে অবহিত করতে শিক্ষাবোর্ডেআসেন শতাধিক ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী।
বিবিরহাট এলাকা থেকে শিক্ষাবোর্ডে আসা শাকিল নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মা কান্না জড়িত কণ্ঠেবাংলানিউজকে জানান, মানবিক বিভাগ থেকে ৪.৪৩ পেয়ে আমার ছেলে এসএসসি পাস করে। পরে কম্পিউটারের দোকান থেকে কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করি। আমার ছেলে যেহেতুদৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেহেতু প্রতিবন্ধী কোটা থাকবে এ আশায় কোটায় আবেদন করি। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তির মনোনিত হয়। কিন্তু কলেজে গিযে আমার কাছ থেকে শিক্ষা কোটার কাগজপত্র খোঁজে তারা। কিন্তু আমার ছেলে তো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। খুব কষ্টের মাধ্যমে ছেলেকেরহমানিয়া স্কুল থেকে পাস করিয়েছি। এখন ভুলক্রমে শিক্ষাকোটায় আবেদন করেছি। আমার ছেলের ভর্তি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সরকার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নানান কল্যাণমূলক কাজ করছে। কিন্তু কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোন সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়নি। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। কলেজ ভর্তিতে প্রতিবন্ধী কোটার অপশন রাখার জন্য তিনি সরকারের কাছে আবেদন জানান।
শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, ভর্তি নিশ্চায়নের মাধ্যমে কলেজে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। তবে কিছু ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আবেদনে গরমিল করেছে। কোটা না থাকা সত্ত্বেও তারা কোটায় আবেদন করেছে। কিন্তু কোটা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দিতে না পারলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তি করাবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে নির্ধারিত সময়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষে কলেজে শূন্য আসন সাপেক্ষে তাদের নতুন করে আবেদনের সুযোগ থাকবে। এ সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও অনেকে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও মাইগ্রেশন করে কলেজ পরিবর্তন করেছে। সেক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থী নির্ধারিত কলেজে ভর্তি হতে গড়িমসি করার কথাও জানান তিনি।
প্রথম দফার ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে বৃহস্পতিবার (২২ জুন)। পরবর্তীতে ২৮ ও ২৯ জুন এবং ২ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ভর্তির চূড়ান্ত নিশ্চায়ন করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
এসবি/টিসি