ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খলিফাপট্টির পোশাক যায় কুমিল্লা থেকে টেকনাফ

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১১ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
খলিফাপট্টির পোশাক যায় কুমিল্লা থেকে টেকনাফ খলিফাপট্টিতে চলছে শেষ মুহূর্তের পোশাক তৈরি। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: খলিফাপট্টিতে ঢুকতেই কানে ভেসে আসছে সেলাই মেশিনের বিরামহীন সেই ঘরঘরে আওয়াজ। গলি ধরে সামনে এগোতেই চোখে পড়ে সারি সারি দর্জি দোকান। রংবেরঙের তৈরি পোশাক ঝুলছে দোকানের পুরোটাজুড়ে।

ঈদের আর বেশি দেরি নেই বলে নগরীর দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডের খলিফাপট্টিতে চলছে শেষ মুহূর্তের পোশাক তৈরি।

সেখানের প্রায় প্রতিটি দোকানের দ্বিতীয় তলা থেকে ওপরের তলাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে পোশাক বানানোর কারখানা হিসেবে।

নিচতলায় বিক্রির জন্য সাজানো হয়েছে সেসব তৈরি পোশাক। কাপড় তৈরি থেকে বিক্রি-খলিফাপট্টির যেনো ‘ঘুম নেই’ এক মুহূর্তও।
খলিফাপট্টিতে চলছে শেষ মুহূর্তের পোশাক তৈরি।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

তবে ঈদের বেশি দেরি নেই বলে পোশাক তৈরির চেয়ে বিক্রির দিকেই বেশি নজর ব্যবসায়ীদের। তাদের বক্তব্য এতদিন বানানো পোশাক এখন কেবল বিক্রির পালা।

খলিফাপট্টি বণিক কল্যাণ সমিতির হিসাবে এখানে বর্তমানে দোকান আছে প্রায় তিনশর মতো। ঈদ উপলক্ষে এসব দোকানে ছয় হাজারের মতো শ্রমিক কাজ করছেন।

খলিফাপট্টির দর্জি ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পবিত্র শবে বরাতের পর থেকেই ঈদ উপলক্ষে তারা পোশাক বানানোর মূল প্রস্তুতি শুরু করেন। এর আগে জোগাড় করা হয় ডিজাইন, কোন ধরনের পোশাক বেশি চলছে সেটিও মাথায় রাখেন দোকানিরা। তারপর শুরু হয় পোশাক তৈরির ধুম। খলিফাপট্টিতে চলছে শেষ মুহূর্তের পোশাক তৈরি।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

আবদুর রহিম নামের এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, বড় বড় উৎসবগুলোতে  দেশের আধুনিক শপিং মলসমূহে ভারত, থাইল্যান্ড কিংবা পাকিস্তান থেকে যেসব ডিজাইনের তৈরি পোশাক আসে, এখানকার কারিগররা হুবহু তা রপ্ত করে ফেলে। এরপর তারাও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই ডিজাইনের পোশাক তৈরি করে দোকানে বিক্রির জন্য তোলেন।

ব্যবসায়ীদের মতে, এখানকার তৈরি পোশাকের দাম শপিং মলের পোশাকের চেয়ে অনেক কম। তাই শুধু মফস্বলের দোকান নয়, নগরীর অনেক শপিং মলের ব্যবসায়ীদেরও ভরসার জায়গা এই খলিফাপট্টি।

ব্যবসায়ীরা জানান, একটা সময় প্রায় সারাদেশের শপিং মলে যেতো খলিফাপট্টির তৈরি পোশাক। তবে এখন সেই জৌলুস নেই। দোকানিদের অনেকেই বিদেশমুখী হয়েছেন। যারা আছেন-তারাও বাপ দাদাদের পুরোনো পেশা বলে ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। খলিফাপট্টিতে চলছে শেষ মুহূর্তের পোশাক তৈরি।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

খলিফাপট্টি বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সামশুল আলম জানান, নগরীর শপিংমলগুলোতে তো আমাদের তৈরি পোশাক উঠেই। তার পাশাপাশি দক্ষিণে কক্সজাবারের টেকনাফ পর্যন্ত, উত্তরে কুমিল্লা পর্যন্ত সঙ্গে তিন পার্বত্য জেলার ব্যবসায়ীরা এসে আমাদের তৈরি পোশাক নিয়ে যায়। ’

তিনি বলেন, মানুষের নাগালের মধ্যে দাম রেখে বাজারে চলমান ডিজাইনের পোশাক তৈরি করা হয় বলেই খলিফাপট্টি এখনও টিকে আছে সগৌরবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭

টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।