ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কেউ মানে, কেউ মানে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
কেউ মানে, কেউ মানে না জামালখানের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মূল ফটকে চেম্বার বন্ধের নোটিশ

চট্টগ্রাম: ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভাঙচুর, চিকিৎসকদের নাজেহাল ও রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) ডাকা ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ’ কর্মসূচি কেউ মেনেছে, কেউ মানেনি।

রোববার (১৮ জুন) সকাল ছয়টা থেকে সোমবার (১৯ জুন) সকাল ছয়টা পর্যন্ত সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল বিএমএ চট্টগ্রাম শাখা।

সরেজমিন রোববার বিকেল পাঁচটায় ডাক্তারপাড়া খ্যাত জামালখান সড়কে দেখা গেছে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ চেম্বারে রোগী আনাগোনা।

লিচুবাগান এলাকার ল্যাব ওয়ানে নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ মেজবাহুল হক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এসসি ধরকে চেম্বার করতে দেখা গেছে।

আগ্রাবাদ মুহুরীপাড়া থেকে আফরিন সুলতান নামের এক বছরের ছেলেকে নিয়ে ডা. সৈয়দ মেজবাহুল হকের চেম্বারে আসেন মোহাম্মদ আলী।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, বাচ্চার কাশি বেড়ে যাওয়ায় নিয়ে এসেছেন। ডা. দেখে দিয়েছেন।

আরেকটি শিশুর মা জানালেন, তার বাচ্চার এলার্জির সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় ডা. সৈয়দ মেজবাহুলের চেম্বারে নিয়ে এসেছেন।

বিএমএ ঘোষিত কর্মসূচি না মেনে চেম্বার করার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সৈয়দ মেজবাহুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সাত-আটটি শিশুকে দেখেছি। এর মধ্যে অনেক রোগী গ্রামাঞ্চলসহ দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন। আবার কেউ কেউ পূর্বনির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে এসেছেন। তারা বিরক্ত করছিল। এদিকে আবার একটি ইফতার পার্টিতে যাওয়ার প্রোগ্রাম রয়েছে। তাই বিকেল পাঁচটার দিকে চেম্বারে এসেছি।

এ সময় তিনি মোবাইল ফোনে একটি ম্যাসেজ দেখিয়ে বলেন, সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। মাত্র এক ঘণ্টা আগেই তো চেম্বারে এসেছি।

সেনসিভ, ল্যাব এক্সপার্ট, বেলভিউসহ বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাম ডাক্তারদের চেম্বার পরিদর্শন করে দেখা গেছে রোগীর রক্ত, কফসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও রিপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়নি। অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের রোগীদের যারা সিরিয়াল দেন তারাই আসেননি। সেনসিভের মূল ফটকে সব ডাক্তারদের চেম্বার বন্ধ রাখার বিষয়ে হাতে লেখা নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো চেম্বারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোগীদের ওয়েটিং রুমে বসে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ উপভোগ করতে দেখা গেছে।

চেম্বার বন্ধ থাকায় রোগীর আনাগোনা তুলনামূলক কম ছিল বলে জানান জনকল্যাণ ফার্মেসির মালিক রতন বড়ুয়া জানান, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ থাকায় ওষুধপত্র তেমন একটি বিক্রি হয়নি। দু-তিন পাতা প্যারাসিটামল বিক্রি করেছি মাত্র।   

বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলাগুলো মিলে সহস্রাধিক ডাক্তারের চেম্বার রয়েছে। প্রায় সবগুলো চেম্বারই বন্ধ ছিল।  

বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, যারা বিএমএর ঘোষিত কর্মসূচি অমান্য করে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখেননি তাদের বিরুদ্ধে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭

এআর/টিসি      

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।