কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর শাহীন রহমানকে। কমিটি এরই মধ্যে হেলিকপ্টার ক্রয়পদ্ধতি, সংরক্ষণ, জনবল নিয়োগ ও পরিচালনার বিষয়ে খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে।
এদিকে বন্দরের হেলিকপ্টার কেনার চিন্তাকে বিলাসিতা এবং অর্থের অপচয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নৌ-মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সক্ষমতা বাড়ছে। তাই বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। বিলাসিতার প্রয়োজন নেই। বন্দরের জন্য হেলিকপ্টার প্রয়োজন হলে যে কোন সময় কেনা যাবে। তবে এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই। বন্দরের কর্মকর্তারা সক্ষমতা বাড়ানোর চিন্তা না করে অকাজে মনোযোগ দিয়েছে।
হেলিকপ্টার কেনার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) হাদী হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সমীক্ষা ছাড়া বড় ধরনের কোন প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত নয়। এছাড়া যেসব প্রকল্প আয়বর্ধক নয় সে ধরনের প্রকল্প গ্রহণও ঠিক হবে না।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সমীক্ষা ছাড়া মহেশখালে বাঁধ দিয়ে বন্দরের প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অথচ বন্দরের কিংবা এলাকার জনগণের কোন লাভ হয়নি।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, আগামীতে নিরাপত্তার জন্য দরকার হতে পারে তাই আমরা হেলিকপ্টার কেনার চিন্তাভাবনা করছি। তবে বিষয়টি এখনো স্টাডি পর্যায়ে আছে। একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি যদি কেনা দরকার বলে মনে করে তখন আমরা নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। তারপর কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে বে-টামির্নাল হবে, মাতারবাড়ি টার্মিনালসহ বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তখন হেলিকপ্টার প্রয়োজন হতে পারে। সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা হেলিকপ্টার কেনার চিন্তাভাবনা করছি।
চট্টগ্রাম-পানগাঁও নৌরুট জনপ্রিয় করে তুলতে দুটি জাহাজ কিনেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে চালাতে না পেরে ভাড়া দেওয়া হয় জাহাজ দুটি। একইভাবে বন্দর আবাসিক এলাকার পানি সংকট নিরসন ও জাহাজে পানি সরবরাহের কথা বলে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্লান্ট এখন নষ্ট। হরিণ পুষতে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে বিশাল এলাকায় ঘেরাও দিয়ে অর্থ ব্যয় করা হলেও এখনো পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়নি। কেনা হয়েছিল একটি অ্যাম্বুলেন্স শিপ। সেটিও ব্যবহৃত হচ্ছে না। সর্বশেষ প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহেশখালের বাঁধটি অপসারণ করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া পরিবেশ অধিদফতর ও চট্টগ্রাম ওয়াসার আপত্তির পরও বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্দরে যন্ত্রপাতি সংকট প্রকট হলেও সেদিকে নজর দেয়নি বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। বিভিন্ন ধরনের অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হাতে নিয়ে বন্দরের টাকা লুটপাট করেছে।
এর আগেও বন্দর বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। কিন্তু কোনটিতেই সফল হয়নি। বরং টাকার অপচয় হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
এমইউ/আইএসএ/টিসি