তবে সিরাজ উল্লাহ’র দাবি সাধারণ সম্পাদক নিজেই স্বাক্ষর করে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। সাংগঠনিকভাবে ব্যর্থ হয়ে বেলায়েত হোসেন বুলু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন।
জানা গেছে, নগরীর ইপিজেড থানায় নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। ফলে যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাদের নিয়ে ২০১৭ সালের এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর দাবি নগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দেওয়া সনদে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ ওই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে বলাও হয়নি। এমনকি তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।
একটি বাসার ড্রয়িং রুমে বসে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ইপিজেড থানা কমিটি নেই। সেখানে একটি বাসায় বসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে নগর ছাত্রদলের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এ ধরনের কাজ করে গাজী সিরাজ উল্লাহ সস্তা রাজনীতি করছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঘরে বসে নেতা-কর্মীদের ভাই-বোনকে সংবর্ধনা দিলে সাংগঠনিকভাবে আমাদের কোন লাভ হবে না। এটা ছাত্রদলের সংবর্ধনা হবে না। সামগ্রিকভাবে অনুষ্ঠান করতে হবে। অথচ সভাপতি তাই করেছেন।
এদিকে স্বাক্ষর জাল করে সনদ দেওয়ার বিষয়ে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বেলায়েত হোসেন বুলু। সেখানে তিনি প্রতারণার ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন নেতা-কর্মীদের।
‘আমার (বেলায়েত হোসেন বুলু, সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল) স্বাক্ষর জাল করে চট্টগ্রাম ইপিজেড় থানা ছাত্রদলের ব্যানারে বাসার ড্রয়িং রুমে বসে তথাকথিত এসএসসি'২০১৭ উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনার নামে ভুয়া শুভেচ্ছা সনদ বিতরণ করছেন নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ। যা সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল তথা ছাত্রসমাজকে অসম্মানের সামিল। স্বাক্ষর জাল করে সনদ দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এ ধরনের সকল অপকর্ম ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকুন। ’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কিছুদনি আগেই সাধারণ সম্পাদক (বেলায়েত হোসেন বুলু) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপরও আমি তাকে নিয়েই কাজ করছি। সব অনুষ্ঠানে তাকে বলা হচ্ছে। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে তিনি কিছুই করতে পারছেন না। ফলে আমাদের নামে বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে।
স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার স্বাক্ষর জাল করিনি। সনদে তিনিই স্বাক্ষর করেছেন। আমি স্বাক্ষর জাল করলে কেন্দ্রে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিক। কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি।
বুলু ছাত্রদল ছেড়ে স্বেচ্ছাসেবক দলে চলে যাবেন উল্লেখ করে সিরাজ বলেন, আমি তাকে বলেছি যেখানেই যাও ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দাও। কিন্তু তিনি এসবে কান দিচ্ছেন না।
সংগঠনের সহসভাপতি জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ইপিজেড থানায় এখনো কমিটি গঠন হয়নি। যারা কাজ করছে তাদের সংবর্ধনা সভা আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে তিনি ওইদিন কুমিল্লা ছিলেন। এছাড়া সনদে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের প্রিন্টেড স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব কাজে তার সহযোগিতা করা প্রয়োজন। অস্বীকার করলে তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা বুঝে নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
এমইউ/টিসি