এক সপ্তার ব্যবধানে প্রতি মণে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দাম কমলেও ছোলার ক্রেতা নেই। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দাম কম থাকলেও খাতুনগঞ্জে বৃহস্পতিবার ক্রেতা না থাকায় বেচা-কেনা খুব বেশি হয়নি।
ছোলা বিক্রি কমে যাওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা গরম ও অতিরিক্ত আমদানিকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, তীব্র গরমের কারণে এবার সাধারণ মানুষ ইফতারিতে ছোলার পরিবর্তে মৌসুমি ফলকে বেছে নিতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভাল মানের প্রতিমণ ছোলা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭৮০ টাকায়। দশদিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজার টাকারও বেশি দামে। মাঝারি মানের ছোলা বিক্রি হয় ২ হাজার ৭০ টাকায়। নিম্ন মানের ছোলা বিক্রি হয় ২ হাজার ৬৫৫ থেকে ৬৮০ টাকায়। দশদিন আগেও মাঝারি মানের ঝোলা ২ হাজার ৯০০ এবং নিম্ন মানের ছোলা বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
খাতুনগঞ্জের অন্যতম আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের আবুল বশর বাংলানিউজকে বলেন, গত ১০ থেকে ১৫ দিন আগের তুলনায় মণপ্রতি ছোলাম দাম কমে গেছে। প্রতিমণ ছোলায় মানভেদে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
পর্যাপ্ত আমদানি, পাইপলাইনে থাকা ছোলা বাজারে আসার কারণে দাম কমেছে বলে মনে করেন তিনি।
খাতুনগঞ্জ ডাল মিল মালিক সমিতির সভাপতি সঞ্জয় দেব খোকন বাংলানিউজকে বলেন, খাতুনগঞ্জে ছোলার কোন ক্রেতা নেই। ছোলা নিয়ে বসে আছি কেউ কিনতে আসছে না। আমরা কাস্টমারের অপেক্ষায় আছি।
চাহিদার তুলনায় প্রায় ৬০ হাজার টন বেশি ছোলা আমদানি হওয়ায় দাম কমছে বলে মনে করছেন পাইকারি বিক্রেতা হক ট্রেডিং এর মালিক আজিজুল হক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছোলার চাহিদা আছে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টন। আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টন। ফলে বাজারে প্রভাব পড়েছে।
প্রচণ্ড গরমের কারণে ছোলার চাহিদা কমছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোজাদাররা ছোলার বদলে মৌসুমি ফল বেছে নিতে পারেন। ফলে বিক্রি কমে গেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৬ সালের পুরো বছরে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) ছোলা আমদানি হয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার টন। অথচ ট্যারিফ কমিশন ও সরকারি হিসাবে, প্রতিমাসে ছোলার চাহিদা গড়ে ১২ হাজার টন অর্থাৎ পুরো বছরের চাহিদা ১ লাখ ৪৪ হাজার টন। এমনকি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মোট আমদানি হয়েছে আরো ৫৬ হাজার টন।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আমদানির শীর্ষে রয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্মাইল ফুড প্রোডাক্টস। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সালে মোট আমদানীকৃত ছোলার পরিমান ২২ শতাংশ। ২০১৭ সালের তিন মাসেও শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৬ সালে ছোলা আমদানিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিসমিল্লাহ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সিলভার ফুড প্রোডাক্টস, তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাকি ট্রেডিং, চতুর্থ স্থানে রুবি ফুড প্রোডাক্টস ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গাজী ট্রেডিং। আর ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে এন আর ট্রেডিং। ২০১৭ সালের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ছোলা আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে এন আর ট্রেডিং।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
এমইউ/টিসি