ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইয়াবা ছাড়, না হয় এলাকা ছাড়তে হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
ইয়াবা ছাড়, না হয় এলাকা ছাড়তে হবে ইয়াবা ছাড়, না হয় এলাকা ছাড়তে হবে

কক্সবাজার: ‘ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হয় ইয়াবা ছাড়তে হবে না হয় এলাকা ছাড়তে হবে। জঙ্গিরা যেমন মানুষ হত্যা করে ইয়াবাও তিলে তিলে মানুষ হত্যা করে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা যতো বড়ই ক্ষমতাধর, প্রভাবশালী ও গডফাদার হোক তাদের তথ্য দিন। পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এমন হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক।

তিনি ২৪ মে (বুধবার) বিকেলে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা পুলিশ আয়োজিত মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে জঙ্গিবাদ নির্মুলে বাংলাদেশ আজ রুল মডেল হয়েছে। গতকালও ব্রিটেনের মতো আধুনিক দেশে অত্যাধুনিক ক্যমেরা থাকার পরও আইএস’র জঙ্গি হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছেন।

অথচ আমরা সেখানে গুলশান এবং শোলাকিয়ার দুটি হামলা ছাড়া বাকী ২০ টি জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে জনগণের সচেতনতা ও দেশাত্মবোধের কারণে। আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই , আপনাদের পাশে রাখতে চাই, মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আপনাদের সহযোগিতা চাই। ’

মাদক নির্মূল প্রসঙ্গে পুলিশের আইজিপি বলেন, ইতিমধ্যে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে ও মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ৭০ জন নিহত হয়েছে। ইয়াবা প্রতিরোধে বন্দুক যুদ্ধে আরও মারা গেলে পুলিশ কোন দয়া দেখাবেনা।

তিনি পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে করে বলেন ইয়াবা ব্যবসায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কেউ জড়িয়ে পড়লে শুধু চাকরীচ্যুত করা হবে না,মাদক আইনে মামলা করে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

যেকোন ফরমেটের হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করা গেলে ইয়াবা ব্যবসায়ও অনেকটা নিয়ন্ত্রন হবে একজন বক্তার এমন বক্তব্যে আইজিপি হুন্ডি ব্যবসায় বন্ধে স্থানীয় পুলিশ তৎপরতা শুরুর নির্দেশ দেন।
সভায় বিশেষ অতিথি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলেন, মিয়ানমার  আমাদের জীবননাশক মাদক দিচ্ছে আর আমরা দিচ্ছি জীবন রক্ষাকারী ঔষুধ। এর থেকে পরিত্রান পেতে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ উখিয়াবাসীকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।  
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মনির উজ্ জামান বলেন, ‘কতিপয় ইয়াবা ব্যবসায়ীর কারণে গোটা এলাকার বদনাম ছড়িয়ে পড়েছে। কক্সবাজারের এই বদনাম গোচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ মে’র কক্সবাজারের জনসভায় ইয়াবার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর  পুলিশ সদস্যরা আইনশৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি ইয়াবা উদ্ধারে আরো তৎপর হয়।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ’র ডিআইজি এসএম মনির উজ্ জামান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন, কক্সবাজার জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি এ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের কমান্ডার  মোহাম্মদ শাহজাহান, টেকনাফ উপজেলা কমিউিনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।

পবিত্র কুরআন , গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে এ সমাবেশের শুরু হয়।  
সমাবেশের আগে পুলিশের আইজিপি একেএম শহিদুল হক সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত টেকনাফ মডেল থানা নতুন ভবন ও দুপুরে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন।  

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল এসএম আরিফুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, জেলা পরিষদ সদস্য শফিক মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর, পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম, সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন, নুর আহম্মদ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজান মিয়া, টেকনাফ উপজেলা দূনীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাষ্টার জাহেদ হোসেন, টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাংবাদিক আব্দুল্লাহ মনির প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়ঃ ২০৪০ ঘন্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭

টিটি/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।