কোনোভাবেই এই মৃত্যু থামানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস হাই স্কুলের ১০ম শ্রেণির তিন ছাত্রীর উদ্ভাবণ আশা জোগাতে পারে।
মঙ্গলবার থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেন্ট প্লাসিড হাই স্কুলে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলাতে এই প্রযুক্তির ডামি নিয়ে হাজির হয়েছেন তাশরিফা জাফর, জান্নাতুল আদন জোহা, সাদিকা আফতাব প্রমি।
তাদের এই প্রযুক্তি দুইভাবে মৃত্য ঠেকাবে।
তাই রেললাইনের উপর দুইভাবে হওয়া এই মৃত্যু ঠেকাতে তাদের উদ্ভাবণে দুই ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
রেলক্রসিংয়ে যেভাবে মৃত্যু ‘ঠেকাবে’: সাধারণত ট্রেন আসছে এমন বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গার্ড রেলক্রসিংয়ের দু পাশে গেট কিংবা ব্যারিকেড নামিয়ে দেন। এই গেট বা ব্যারিকেড নামিয়ে দেওয়া হয় মূলত কেউ যাতে ট্রেন চলার সময় সেটা ক্রস করে রেললাইন পার হতে না পারে। এই ব্যারিকেডের সঙ্গেই মূলত লেজার প্রযুক্তি সংযুক্ত থাকবে। গার্ড তার কক্ষ থেকে লেজার সুইচটা অন করতেই বেরিকেডের সঙ্গে সংযুক্ত লেজার সক্রিয় হয়ে যাবে। এই লেজার সক্রিয় হয়ে যাওয়ার ফলে কেউ ওই ব্যারিকেড পার হয়ে যেতে চাইলেই শক খাবেন। তবে এই শকে বড় ধরণের ক্ষতি হবে নাম কারণ ক্লাস ওয়ান পর্যায়ের লেজার ব্যবহার করা হয়েছে। এই শকের ফলে যে কেউ শতর্ক হয়ে যাবেন, বুঝতে পারবেন, ‘বিপদ সংকেত, ট্রেন আসছে’!
রেললাইনে কাঁটা পড়া ‘ঠেকাবে’ যেভাবে: অনেকে আত্মহত্যার জন্য সাধারণত রেললাইনের জনবিরল নির্জন স্থানকে বেঁচে নেয়। যাতে তাকে কেউ বাঁচাতে না আসে। এই অবস্থায়ও তাদের বাঁচিয়ে দিতে পারে সামান্য একটি প্রযুক্তি। রেললাইনের নির্দিষ্ট স্থানে ‘টাচ সেন্সর’ সংযুক্ত করা থাকবে। আত্মহত্যার জন্য আসা মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য কিছুক্ষণ বেশি সময় ধরে রেললাইনের ওপর অপেক্ষা করতে থাকেন। রেললাইনের ওপর এই ‘সামান্য বেশি অপেক্ষায়’ তাকে বাঁচিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে টাচ সেন্সরে তার স্পর্শ লাগায় সেটি সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং এর সঙ্গে যুক্ত আশেপাশের কোনো কন্ট্রোলরুমে থাকা লাইন জ্বলে উঠবে। যখন বুঝা যাবে অতিরিক্ত সময় ধরে লাইট জ্বললে বুঝা যাবে ট্রেন আসার সময় হয়ে যাওয়া সত্বেও রেললাইনের ওপর মানুষের অস্তিত্ব রয়ে গেছে আত্মহত্যার জন্য কিংবা বিপদে পড়ে কেউ আটকে গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কন্ট্রোলরুম থেকে ট্রেন চালককে ট্রেন থামার নির্দেশ দেওয়া যাবে। এর ফলে বেঁচে যেতে পারেন রেললাইনের ওপর উঠে যাওয়া মানুষ।
মঙ্গলবার বিকেলে মেলার প্রথমদিন নিজেদের উদ্ভাবণের বিষয়ে কথা হয় তাশরিফা জাফর, জান্নাতুল আদন জোহা, সাদিকা আফতাব প্রমির সঙ্গে।
তিনজনই একযোগে বললেন, ‘নিয়মিত গণমাধ্যমে দেখছি ভুলবশত রেললাইনের উপরে উঠায় কেউ কাঁটা পড়েছেন, আবার জেনেশুনে কেউ আত্মহত্যা করতে রেললাইনকে বেছে নিয়েছেন। এটি আমাদের ভাবিয়েছে। এমন মুত্যু কিভাবে ঠেকানো যায় সেই চিন্তা থেকে আমরা এই প্রযুক্তিটি তৈরি করার চেষ্টা করছি। আশা করছি বড় পর্যায়ে এটি কাজে লাগানো যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
টিএইচ/টিসি