ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রমজানে যানজট এড়াতে সচেতনতাই ভরসা সিএমপির

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
রমজানে যানজট এড়াতে সচেতনতাই ভরসা সিএমপির  চট্টগ্রাম নগরজুড়ে দু:সহ যানজট (ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

চট্টগ্রাম: নগরজুড়ে চলা দু:সহ যানজট মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই নগর পুলিশের (সিএমপি)।  প্রতিবছর রমজানের আগে যানজট এড়াতে সিএমপি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও এবছর শুধু সচেতনতার মধ্যেই পরিকল্পনা সীমাবদ্ধ রেখেছে। 

সচেতনতাকে প্রাধান্য দিয়েই রমজানকে সামনে রেখে সোমবার থেকে নগরীতে শুরু হচ্ছে ট্রাফিক সপ্তাহ। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে এর উদ্বোধন করবেন।

    

নগর পুলিশের কর্মকর্তারা ভাবছেন, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নগরবাসীকে সচেতন করা গেলে রমজানে যানজট সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তবে ইফতার শুরুর আগে কর্মস্থল ফেরত মানুষ যানজটের কারণে সঠিক সময়ে বাসায় পৌঁছাতে না পারলে জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হবে বলেও মনে করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, যানজট নিয়ে পরিকল্পনার মধ্যে আমরা সচেতনতার উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি।   এজন্য ট্রাফিক সপ্তাহ করছি।  পরিবহন শ্রমিকরা  যাতে যত্রতত্র গাড়ি না থামায়, ট্রাফিক আইন মেনে চলে।   তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে ‍পারলে রমজানে যানজট অনেকটাই কমবে।

যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামাকে যানজটের একমাত্র কারণ বলে মনে করেন না নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা।  তাদের মতে, প্রভাবশালীদের ব্যক্তিগত যানবাহন যত্রতত্র পার্কিং, উন্নয়ন কার্যক্রম ও খোঁড়াখুড়ি, সড়কে হকার বসা ও সিগন্যালে বাম দিকে যাওয়ার গাড়ি আটকে থাকা যানজটের অন্যতম কারণ।   এর মধ্যে শুধু রাস্তায় হকার না বসা এবং সড়কের বামদিকে ডিভাইডার বসানোর কাজ করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আগে রমজানে স্বল্পমেয়াদে কয়েকটি সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানের মাধ্যমে যানজট সহনীয় রাখা হত।   ইফতারির আগে-পরে ট্রাফিকের সঙ্গে ক্রাইম ডিভিশনের কর্মকর্তাদেরও মাঠে নামিয়ে দেয়া হত।   এবার সেটা হচ্ছে না।

এই অবস্থায় রমজানে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কালুরঘাট অথবা শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ট্রাফিক সদস্যরা।  নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, সল্টগোলা মোড়, ইপিজেড, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বন্দর পর্যন্ত দিনের বেশিরভাগ সময় যানজট লেগে থাকে।   বিশেষ করে ইপিজেড ছুটির সময় সন্ধ্যার দিকে একেবারে অচল হয়ে পড়ে ওই এলাকা।   বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে টাইগারপাস হয়ে ইস্পাহানি মোড় পর্যন্ত যানজট কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে।  

এরপর লালখান বাজার থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে।   এজন্য দুই পাশের যানবাহন চলাচলের সড়ক সংকুচিত হয়ে গেছে।   ফলে দীর্ঘ এই সড়কের দিনে-রাতে সবসময় যানজট লেগে থাকে।   বিশেষ করে ওয়াসা মোড় থেকে ষোলশহর দুই নম্বর গেট পর্যন্ত যানজটের অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।   এর প্রভাবে দুই নম্বর গেইট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত সড়কেও যানজট মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে।  

বহদ্দারহাট থেকে চান্দগাঁও বাস টার্মিনাল অভিমুখে ফ্লাইওভারের লুপ নামানোর কাজ চলছে।  সড়ক সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত যানজট এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়।   এরপর চান্দগাঁও থানার সামনে থেকে শাহ আমানত সেতু এবং বাস টার্মিনাল থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সিটি সার্ভিসের একটি বাসের চালক মো.বশির বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে গাড়ি স্টার্ট দিলে কালুরঘাট পৌঁছাতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।   তিন ঘণ্টায় এখন মানুষ ঢাকার কাছাকাছি পৌঁছে যায়।

মূল সড়কটির বাইরে নগরীর চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, বাকলিয়া, ফিরিঙ্গিবাজার, পাথরঘাটসহ বিভিন্ন অলিগলিতেও প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, মূল সড়কটা যদি ঠিক রাখতে পারি তাহলে বাকিগুলোতে যানজট থাকবে না।   আশা করি রমজানে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারব।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।