ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইয়াবায় বিনিয়োগে রিয়াজউদ্দিন বাজারের ৩০ ব্যবসায়ী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
ইয়াবায় বিনিয়োগে রিয়াজউদ্দিন বাজারের ৩০ ব্যবসায়ী ইয়াবা

চট্টগ্রাম: নগরীর নিউমার্কেট এবং রিয়াজউদ্দিন বাজারকেন্দ্রিক কমপক্ষে ৩০ ব্যবসায়ী মায়ানমার থেকে ইয়াবা আনতে অর্থ বিনিয়োগ করছে।  তাদের আনা ইয়াবা খালাস হচ্ছে আনোয়ারা উপকূলে।  আর ইয়াবার জন্য তারা হুন্ডির মাধ্যমে মায়ানমারে টাকা পাঠাচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। আনোয়ারাকেন্দ্রিক ১২টি ইয়াবা সিন্ডিকেটের মধ্যে কয়েকটির সঙ্গে নিউমার্কেট-রিয়াজউদ্দিন বাজারের হাতেগোণা কয়েকজন ব্যবসায়ীর যোগসাজশের তথ্যপ্রমাণ আছে পুলিশের কাছে।

নিউমার্কেট-রিয়াজউদ্দিন বাজারকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা অর্থলগ্নিকারী হিসেবে থাকলেও এই ব্যবসার বিভিন্ন পর্যায়ে আনোয়ারাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।

আনোয়ারা থেকে দুই লাখ ইয়াবা আটকের বিষয়ে জানাতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি বলেন, ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা আছে।

 আইনের ভাষায় আমাদের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। আমরা শুধু অপেক্ষা করছি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যদি তাদের নাম আসে তখন তাদের ধরব।
  অথবা সরাসরি তাদের হেফাজত থেকে মাদক উদ্ধারের চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) একেএম এমরান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, তিনটি ধাপে তিন ধরনের লোকজন ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।   একটি হচ্ছে মাঝিমাল্লা, এরা শুধুমাত্র মায়ানমার কিংবা টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে আসে।   আরেকটি গ্রুপ আছে যারা পারকি সমুদ্রসৈকতে কিংবা শহরের দিকে থাকে।   এরা মিডলম্যান হিসেবে কাজ করে।   মূলত সিন্ডিকেটের মধ্যে যোগাযোগ তৈরিই এদের কাজ।  

‘আর তথাকথিত কিছু ব্যবসায়ী আছে যারা রিয়াজউদ্দিন বাজার ও নিউমার্কেটকেন্দ্রিক।  তারা এখানে ব্যবসার আড়ালে মূলত ইয়াবা ব্যবসা করে। তারা অর্থটা এখান থেকে দেয় আর হুন্ডির মাধ্যমে মায়ানমারে পাচার হয়।  অনেক সময় মায়ানমার থেকে সরাসরি ইয়াবা আসে আনোয়ারায়।  আর টাকাটা হুন্ডির মাধ্যমে পৌঁছে যায়। ’

গত ১০ দিনে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে আটক ১৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন এমরান ভূঁইয়া।

নিউমার্কেট-রিয়াজউদ্দিন বাজারের কারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত জানতে চাইলে তিনি গ্রেফতারের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।   তবে কমপক্ষে ৩০ জনের নাম তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমরান।

এর আগে স্বর্ণ চোরাচালানসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে রিয়াজউদ্দিন বাজারের একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাবার কথা জানিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।

শনিবার (২০ মে) ভোরে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ‍উঠান মাঝির ঘাট থেকে ২ লাখ ইয়াবাসহ আব্দুর রহিম নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।

আব্দুর রহিমের বিষয়ে এসপি বলেন, রহিম নিজেই ইয়াবা সংগ্রহ করে।  তিনটি সিন্ডিকেটের কাছে রহিম ইয়াবা সরবরাহ করে।  রহিমদের মতো অনেকেই আছে যারা মাঝিমাল্লা দিয়ে ইয়াবা আনে।  গহিরায় এনে যে সিন্ডিকেট বেশি টাকা দেয় সেই সিন্ডিকেটকে দেয়।  অনেক সময় এক সিন্ডিকেটের সঙ্গে চুক্তি করে আবার যে সিন্ডিকেট বেশি টাকা দেয় সেই সিন্ডিকেটকে ইয়াবা দিয়ে দেয়।  

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমরান বাংলানিউজকে জানান, জব্দ করা দুই লাখ ইয়াবার জন্য বিনিয়োগ করেছে রিয়াজউদ্দিন বাজারকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।  এখানে আব্দুর রহিম মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামে ইয়াবার বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে এসপি বলেন, আনোয়ারার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।   এরপর আছে লোহাগাড়া-বাঁশখালী।  তৃতীয় ধাপে আছে সাতকানিয়া, চন্দনাইশ এবং পটিয়া।  এসব উপজেলায় অভিযান জোরদারের পাশাপাশি আমরা সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

আনোয়ারায় দুই লাখ ইয়াবাসহ আটক ১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।