শনিবার (২৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এই সভায় নগরীর তিন সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এবং জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদলের কঠোর সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের নেতারা।
নগর আওয়ামী লীগের দুই সহ-সভাপতি ডা.আফসারুল আমিন চৌধুরী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি সভায় ছিলেন না।
সভায় থানা আওয়ামী লীগের ১৫ জন নেতা বক্তব্য রাখেন।
কিন্তু এর মাঝেই কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম উঠে কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদের নাম ঘোষণা করেন। এর ফলে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে আর কেউ বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি।
হাছান মাহমুদের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সঞ্চালক আ জ ম নাছির উদ্দিন সাংসদ এম এ লতিফের নাম উচ্চারণ করতেই হট্টগোল শুরু হয়। এসময় মঞ্চের ডান পাশের তৃণমূল প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে ‘ভূয়া ভূয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। তারা লতিফ বক্তব্য রাখতে পারবেন না বলে চিৎকার করতে থাকেন।
এসময় মঞ্চে বসা লতিফ মাথা নিচু আর সঞ্চালক আ জ ম নাছির ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। শামীম উঠে বক্তব্য রাখার জন্য মাহবুবুল আলম হানিফের নাম ঘোষণা করেন।
এর আগে নজরুল ইসলাম বাহাদুর বক্তব্যে লতিফের সমালোচনা করে বলেন, বন্দর এলাকায় আমাদের দলের এমপি আছেন। অথচ দলীয় এমপি দলের কোন কর্মকাণ্ডে নেই। আমি তিনবারের কাউন্সিলর। অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, জেল খেটেছি। অথচ রাজনীতিতে যাদের কোন ত্যাগ নেই তারা এমপি হয়ে বসে আছেন। আগামী নির্বাচনে বন্দর আসন থেকে একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদকে মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ করছি।
ইপিজেড থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ বলেন, বর্তমান এমপির (এম এ লতিফ) সঙ্গে আমাদের কোন শত্রুতা নেই। কিন্তু দলের কাউকে তিনি চিনেন না। দলের কোন কর্মকাণ্ডে তো তিনি নেই।
কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফিরোজ আলম সাংসদ লতিফকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমি পয়সা কামানোর জন্য আওয়ামী লীগ করি না। আমি কথা বলতে কাউকে ভয় করি না। অনেক নেতা, এখানে মঞ্চেও বসে আছেন, তারা দলের সভায় আসেন না। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া উচিৎ।
মহিউদ্দিন-নাছির বিরোধের বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা যারা তৃণমূলের নেতাকর্মী, আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। বিভাজন আছে নেতাদের মধ্যে। অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই বিভাজন শেষ করেন। আপনাদের মধ্যে বিভাজনের জন্য কর্মীদের মধ্যে যদি কোন বিশৃঙ্খলা হয়, দায় আপনাদের নিতে হবে।
বায়েজিদ বোস্তামি থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শফিউল আলম ছগীর সাংসদ বাদল ও বাবলুর সমালোচনা করে বলেন, আমার এলাকার এমপি জাসদের। আমার পাশের এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোতয়ালী আসনের এমপি জাতীয় পার্টির। উনাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই। তারা বরং আমাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টি করছে।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ-বায়েজিদ) এবং চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী-বাকলিয়া) আসনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান ছগীর।
পাঁচলাইশ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, বাদল এমপি আমাদের চিনেন না। আমরা রাজপথে থাকি, আন্দোলন-সংগ্রাম করি। আমরা রাজপথে থাকব আর এমপি আমাদের চিনবেন না, এটা তো হতে পারে না।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অধিকাংশ প্রতিনিধি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদও বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
আরডিজি/টিসি