শনিবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় তিনি বলেন, আমরা হেফাজতের সঙ্গে কোন চুক্তি করিনি। একটা শিক্ষাব্যবস্থাকে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে এসেছি।
‘কোন ইসলামী দলের সাথে আমরা চুক্তি করিনি। আমরা একটা শিক্ষাব্যবস্থাকে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে এসে স্বীকৃতি দিয়েছি। স্বীকৃতি দেওয়া আর জোট করা এক কথা নয়। ’
হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে ৫মে আরেকটি ‘শাপলা চত্বর’ সৃষ্টির পরিকল্পনা বিএনপি-জামায়াত করেছিল বলে অভিযোগ করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) বড় স্বপ্ন ছিল। আগামী ৫মে হেফাজতকে দিয়ে আরেকটা শাপল চত্বর বানানোর খায়েশ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার কৌশলের কাছে সেই খায়েশটা চূর্ণবিচূর্ণ। এখন তাদের মন খারাপ।
কাদের বলেন, মাওলানা শফি হুজুর নিজেই তো বললেন জঙ্গিবাদ ইসলাম সমর্থন করে না। আমাদের প্রধান বিপদ, প্রধান শত্রু জঙ্গিবাদ। কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার পর তারাও সেই জঙ্গিবাদকে এখন ভিন্নভাবে মোকাবেলার কথা বলছেন।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি ইস্যুর পর ইস্যু খাড়া করে আর সব ইস্যু মার খায়। শেখ হাসিনার কৌশলের কাছে, রাজনীতির দাবাখেলায় বিএনপি হেরে গেছে। মিথ্যাচার করে বিএনপি আগামী দিনেও জিততে পারবে না।
‘তারা বলছে আমরা নাকি হাওড়ে লুটপাট করছি। আসলে তাদের মনে অনেক জ্বালা। তারা ক্ষমতায় থাকলে হাওড়ে গিয়ে আরেকটা লুটপাটের আসর বসাতে পারত। এজন্য তাদের মন খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির নেতারা ঘরে বসে ফেসবুকে মিথ্যাচারের ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছে। ’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির ‘মিথ্যাচার’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ভারতের বন্ধু, কিন্তু আমরা বাংলাদেশের স্বার্থকে অক্ষুন্ন রেখে বন্ধুত্ব করি। ভারত আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু, এটা আমরা স্বীকার করি। কিন্তু জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে আওয়ামী লীগ কোন বন্ধুত্ব করতে পারে না।
তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদিও আমাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, হিলারি ক্লিনটনও না। আমাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ।
আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এবার নির্বাচনে আসেননি। সেটা ছিল আপনাদের ভুল। রাজনীতির মাঠ থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন। নিজেরা ভুল করে জনগণের উপর দায় চাপিয়েছেন। আগুন সন্ত্রাস করে মানুষকে কষ্ট দিয়েছিলেন।
‘এবারের নির্বাচনে যদি না আসে, আবারও যদি ভুল করে তাহলে এর দায়ভার বিএনপিকেই বহন করতে হবে। জনগণের উপর দায় চাপাতে পারবে না। এবার নির্বাচনে না এলে বিএনপি রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে চলে যাবে। ’
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বক্তব্য রাখেন।
নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সভায় তৃণমূল প্রতিনিধি হিসেবে ১৫টি থানা কমিটির ১৫জন নেতা বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ইছহাক মিয়া, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংসদ এম এ লতিফ ও সাবিহা মুসা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন এবং নগর কমিটির নেতারা।
সভায় দেড় হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি সভার সমন্বয়ক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
আরডিজি/টিসি