চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মহিউদ্দিন-নাছির বিরোধের কথা উল্লেখ করে এই বক্তব্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের মুরব্বি। তিনি (ওবায়দুল কাদের) নিজেও মহিউদ্দিনকে মুরব্বি মানেন।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, মহিউদ্দিন ভাই, নাছিরের যে বয়স সে তো আপনার ছেলের মত। নাছির কোন ভুল করলে আপনি তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে তাকে শাসন করবেন।
মহিউদ্দিন-নাছির বিরোধ মীমাংসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন ঢাকার হস্তক্ষেপ। আসলে ঢাকার হস্তক্ষেপ নয়। এখানে যে একটা কাদা ছোড়াছুড়ি হয়ে গেল, এর সমাধানের উদ্যোগ মুরব্বি মহিউদ্দিন ভাই নিজেই নিয়েছেন। মহিউদ্দিন ভাই মুরব্বির ভূমিকায় থাকলে ঢাকার কোন হস্তক্ষেপ এখানে লাগবে না।
‘সকল দুঃসময়ে ঐক্যবদ্ধ চট্টগ্রামই আওয়ামী লীগকে পথ দেখিয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের মুরব্বি মহিউদ্দিন ভাই, আমিও তাকে মুরব্বি মনে করি। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। যা হবার হয়ে গেছে। সামনে আর বিভেদ দেখতে চাই না। ’
‘এই চট্টগ্রামে আগেও ছোটখাট সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরীর মধ্যেও সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমরা দেখিনি। রাজনীতিতে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকবে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা রাজনীতির জন্য শুভ নয়। ’
তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ক্ষমতা বেশিদিন থাকে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। টাকাপয়সা বেশিদিন থাকবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে টাকাপয়সা নিয়ে পালাতে হবে। এখন যে টাকা রোজগার করছেন সেটা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। এটা কি কেউ ভাবছেন ?
‘ক্ষমতার জন্য নিজের দল ভারী করার জন্য, পকেট ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের দলে টানবেন না। দুঃসময় আসলে হাজার পাওয়ারের বাতি দিয়েও তাদের খুঁজে পাবেন না। নকলের ভিড়ে আসলরা যেন হারিয়ে না যায়। ’
‘নেতা যদি মনে করেন তিনি নিজে যা করেন তা-ই সঠিক তাহলে নেতা নিজেও ডুববেন, দলকেও ডোবাবেন। ’
ওবায়দুল কাদের বলেন, চাটুকার-মোসাহেবদের বন্দনা সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের চেয়েও ভয়ংকর। চাটুকার-মোসাহেবরা আমাদের যত ক্ষতি করতে পারবে, বিরোধীদলের বিরূপ সমালোচনাও আমাদের তত ক্ষতি করতে পারবে না।
২০মে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা আ’লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, প্রচার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকদের ডেকে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানও শুরু করবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, নতুন সদস্য করার সময় খেয়াল রাখবেন যাতে করে আগাছা-পরগাছা ঢুকে না পারে। দল ভারী করার জন্য আগাছা-পরগাছা ঢোকাবেন না।
নগর আ’লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বক্তব্য রাখেন।
নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই সভায় তৃণমূল প্রতিনিধি হিসেবে ১৫টি থানা কমিটির ১৫জন নেতা বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ইছহাক মিয়া, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংসদ এম এ লতিফ ও সাবিহা মুসা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন এবং নগর কমিটির নেতারা।
সভায় দেড় হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি সভার সমন্বয়ক ও নগর আ’লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
আরডিজি/আইএসএ/টিসি