ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘স্বাধীনতা অর্জন হলেও পাকিস্তানি ভাবধারা রয়ে গেছে’

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
‘স্বাধীনতা অর্জন হলেও পাকিস্তানি ভাবধারা রয়ে গেছে’ ‘স্বাধীনতা অর্জন হলেও পাকিস্তানী ভাবধারা রয়ে গেছে’

চট্টগ্রাম: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ দিবসের ৮৭ তম বার্ষিকীর আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, শোষণ-বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ বিনির্মানের যে স্বপ্নে এদেশের বিপ্লবীরা স্বাধীনতার মন্ত্রে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন সেই স্বপ্ন-আদর্শ আজ ভুলুন্ঠিত হতে যাচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে পারলেও পাকিস্তানি ভাবধারা, ধর্মান্ধ অপশক্তির ভাবধারা পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার বিকেলে নগরীর ডিসি হিলের নজরুল মঞ্চে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে আয়োজিত যুব সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে আলোচনা করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. দিবালোক সিংহ, যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. সাজেদুল হক রুবেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক শিশির চক্রবর্তী।

যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল শিকদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রীতম সাহা, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিপন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে শুদ্ধ রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা সংগঠন রক্তকরবী, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন গণসঙ্গীত পরিবেশন করে।

এছাড়া প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের গীতিআলেখ্য মঞ্চস্ত হয়। সবশেষে বিশিষ্ঠ সংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ গান পরিবেশন করেন।

কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন বলেন, বামপন্থি কমিউনিস্ট নেতা-কর্মী, বুদ্ধিজীবীরা উপমহাদেশের শোষণ-বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মানের আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল আন্দোলন সংঘঠিত করেছিল। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মানের লড়াইকে বেগবান করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

সিপিবি কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. দিবালোক সিংহ বলেছেন, দেশের কোটি কোটি অসহায়, নিঃস্ব সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে ঠকিয়ে লুটপাটের মধ্য দিয়ে লুটেরা ধনীক শ্রেনীর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রাষ্ট্র দেশের গরীব কৃষক-শ্রমিক, ক্ষেতমজুর মেহনতী জনতা মানে না। এ সমাজ ব্যবস্থা বদলাতে হবে।

তিনি বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে সংঘঠিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই এদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম তরান্বিত হয়। সূর্যসেনের উত্তরসূরি কমিউনিস্ট কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধকালে আলাদা বাহিনী গঠন করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। দেশের সকল সংকটময় মূহুর্তে সূর্য সেনের উত্তরসূরি কমিউনিস্ট কর্মীরাই ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছিল। আগামী দিনেও রাষ্ট্রের এ অচলায়তন ভাঙতে ঐক্যবদ্ধ এবং জোরালো আন্দোলনে অবতীর্ণ হতে হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সনের ১৮ এপ্রিল অপার সাহস ও মাতৃভূমির প্রতি অসীম কর্তব্যনিষ্ঠা নিয়ে অগ্নিপুরুষ মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে একদল অসম সাহসী যুবক চট্টগ্রামকে ৪ দিনের জন্য ব্রিটিশমুক্ত করেছিলেন।  ব্রিটিশবিরোধী যুব বিদ্রোহের অনুপ্রেরণাই পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করেছিল। চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের মাধ্যমে ব্রিটিশমুক্ত রাখার শেষদিনে ২২ এপ্রিল পাহাড়তলী জালালাবাদ পাহাড়ে ব্রিটিশ সৈনিকদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে শহীদ হয়েছিলেন অসংখ্য দেশপ্রেমিক বিপ্লবী যুবক।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।