গত ২৩ এপ্রিল মো.আবদুর রহমান সিকদার ও রফি উদ্দিন খান এ চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তারা নিজেদের সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন।
অন্যদিকে নিজেকে নতুন কমিটির কার্যকরী সভাপতি দাবি করে মো.শহিদুল আলম বকুল বলছেন তারা গঠনতন্ত্র ও শ্রম আইন মেনেই কমিটি গঠন করেছেন।
যুগ্ম-শ্রম পরিচালক মো.গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ছয়মাস আগে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারেনি। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিদেশ সফরে গেলে সংগঠনের কয়েকজন মিলে আরেকটি কমিটি দাখিল করে।
বিদেশ যাওয়ার আগে যেহেতু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কাউকে দয়িত্ব দিয়ে যায়নি সেহেতু তাদের অনুপস্থিতিতে সভা আহ্বানের সুযোগ নেই। ফলে তাদের কমিটি গঠন করারও সুযোগ নেই। বিষয়টি জানিয়ে আমরা একটি চিঠিও দিয়েছি।
বর্তমান কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকদের কল্যাণে কোন ভূমিকা রাখেনি অভিযোগ করে শহিদুল আলম বকুল বলেন, তাদের অনিয়ম, দুর্বৃত্তায়ন ও স্বৈরাচারি মনোভাবের কারণে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ। শ্রমিকদের পক্ষে কোন কাজ না করে প্রশাসনের অনিয়মকে সহযোগিতা করে নিজেরা অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন।
তিনি বলেন, কমিটি নিয়মিত কোন সভা করেনি। সভার কোন কার্যবিবরণী ও সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ হয়নি। ফলে বাস্তবায়ন হয়নি কিছুই।
বন্দরের ১২৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শ্রমিকরা ৩৫ হাজার টাকা পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কূপনের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আদায় করেছে। এসব টাকা সংগঠনের কোষাগারে না দিয়ে তারা আত্মসাৎ করেছে।
বন্দরে সুষ্ঠু ট্রেড ইউনিয়নের ধারা ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিবিএ নেতারা বন্দরের কোন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেনি। কারণ তারা এসবের সঙ্গে জড়িত। তাই সংগঠন থেকে তাদের বহিস্কার করতে বাধ্য হয়েছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে শোকজ করার অধিকার কারও নেই দাবি করে ফখরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের অনুপস্থিতিতে কেউ সভা করতে পারে না। এছাড়া যুগ্ম-শ্রম পরিচালক তাদের কর্মকাণ্ডকে গঠনতন্ত্র বিরোধী উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছেন। সুতরাং তারা শোকজ করলেও কি না করলেও কি।
আগামী ৩০ এপ্রিল বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যুগ্ম-শ্রম পরিচালকের দফতর থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চিঠি দিয়েছে। আমরা বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করেছি। সভায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুমোদন করা হবে।
কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনিয়নের সংবিধানের ২৫ ধারা অনুযায়ী কার্যকরী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। এরপরও আপনারা সংবিধানের ১৪ (খ)(গ) এবং ১৪ (ঙ) ধারা অনুযায়ী কোন পদক্ষেপ নেননি। এছাড়া পরিষদের গত ২০১৬ সালের ১৭ মে অনুষ্ঠিত সভার ৩ নম্বর সিদ্ধান্ত এবং যুগ্ম-শ্রম পরিচালকের দেওয়া চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংবিধানের ২৪ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন না করে সময়ক্ষেপন করেছেন। একই সঙ্গে সংবিধানের ২৭ ধারা না মেনে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ১৯০(১)(ঘ) অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের ক্ষতি করেছেন। এতে বন্দরে শ্রম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। যা সংবিধানের ৩ নম্বর ধারার পরিপন্থি এবং ২৬ নম্বর ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এমইউ/টিসি