ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রতিবছর খাল পরিষ্কার তো সমাধান নয়: মেয়র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
প্রতিবছর খাল পরিষ্কার তো সমাধান নয়: মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

চট্টগ্রাম: স্থায়ী সমাধান ও জনসচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছেন জানিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরীর খালগুলো পরিষ্কার, মাটি তোলার পেছনে ‌প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। আমাদের ইক্যুইপমেন্ট ও লোকবল সেদিকে ব্যস্ত থাকছে। অন্যকাজে বিঘ্ন ঘটছে। প্রতিবছর খাল পরিষ্কার তো সমাধান নয়।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্থায়ী সমাধানের ওপর জোর দিয়েছি। পাওয়ার চায়না লিমিটেড ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি করে স্থায়ী সমাধানের একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।

তারা চীন থেকে যন্ত্রপাতি এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরিকল্পনা সাজিয়েছে। সেটি বাস্তবায়নে দরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) চাক্তাই খালকে ঘিরে বাংলানিউজের সরেজমিন প্রতিবেদনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়রের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এসব কথা বলেন।  

খাল ও নালার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র নাছির বলেন, এ সমস্যাগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। তবে অবৈধ উচ্ছেদের ব্যাপারে আমি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। চাক্তাই খালে হাজার হাজার অবৈধ স্থাপনা। কিন্তু আগে তো নিশ্চিত হতে হবে। আরএস, বিএস জরিপের মধ্যে কোনটি অনুসরণ করা হবে তা নির্ধারণ করবে জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করাতে হয়। ম্যাজিস্ট্রেট পাঠাতে হয়। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা দরকার হয়। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব পুলিশ তো নেই। সঠিক সময়ে নির্মোহভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে।   

চাক্তাই খালে ভাটার সময় প্রচুর মাটি দেখা যাওয়া প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সিলট্রেশনই বড় সমস্যা। পলি জমতেই থাকে। আবার নগরবাসী খালে বর্জ্য  ফেলেন। এবারও চাক্তাই খালে বর্জ্য অপসারণ কাজ চলছে। যারা বলছেন চাক্তাই খালে মাটি তোলা হচ্ছে না সেটি ডাহা মিথ্যা কথা।  

বালতি কেটে খাল পরিষ্কার এবং খালপাড়ে বর্জ্য রাখা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এসব তরল বর্জ্য ট্রাকে পরিবহনে অসুবিধা হয়। তাই খালপাড়ে কিছু সময়ের জন্য রাখা হয়। যাতে বর্জ্য থেকে পানি সরে কিছুটা শক্ত (সলিড) হয়। তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে মাঝেমধ্যে অসুবিধা হয়। তোলা বর্জ্য আবার খালে নেমে যায়।

মাস্টারপুলের নিচের তিনটি পাইপ স্থানান্তর সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে কিছু করতে পারি না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজটি করতে হবে। এ লক্ষ্যে চিঠি লিখেছি। সমন্বয় সভায় মৌখিকভাবে বলেছি। শুধু মাস্টারপুল নয়, পুরো শহরের সমস্যা এটি। চসিকের অনুমোদন না নিয়ে, সমন্বয় না করে অনেক সংস্থা আমাদের সেতুর নিচ দিয়ে, নালার ওপর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে খুঁটি বসিয়েছে, পাইপ লাইন টেনেছে। বিদ্যুতের খুঁটি  এটিও জলাবদ্ধতার ক্ষেত্রে বড় একটি সমস্যা।

তিনি বলেন, ফ্লাইওভারের বড় একটি গার্ডার আমাদের ড্রেনে দিয়ে দিয়েছে। মুরাদপুরে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিকের সামনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আমাদের ড্রেন অর্ধেক করে ফেলেছে। চাক্তাই খালের মুখের দিকে খালের ভেতর বহুতল ভবনের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে।    

কর্ণফুলীর ‘অভিশাপে’ অপ্রতিরোধ্য জলাবদ্ধতা। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, কর্ণফুলীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়নি। আশার কথা, বন্দর কর্তৃপক্ষ পুনরায় উদ্যোগ নিয়েছে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের। নৌবাহিনীই দায়িত্ব নেবে। আশাকরি, এবার ভালোভাবে কাজটি সম্পন্ন হবে।

সিটি করপোরেশনের কলসেন্টারে (নম্বর ১৬১০৪) সকাল নয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সেবা পেতে নগরবাসী সহায়তা চাইলে সাড়া দেওয়া হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, খাল খনন, জলাবদ্ধতা ইত্যাদি বিষয়ে যেকোনো বিষয় কলসেন্টারে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড় জলাবদ্ধতা বিষয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (সেল) খোলা হবে। পরিচ্ছন্নতা বিভাগের নাম পরিবর্তন করে প্রকৌশলীদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে অর্গানোগ্রামে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘন্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭

এআর/টিসি  

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।