ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলায় বিক্রির জন্য ঝাড়ু নিয়ে আসা চকরিয়ার নূর মোহাম্মদ (৫০) বাংলানিউজকে বললেন এসব কথা।
রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে তিনি ১ হাজার ৪০০টি ফুলের ঝাড়ু নিয়ে এসেছেন আন্দরকিল্লা মোড়ে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, চকরিয়া থেকে বেশ কয়েকজন ঝাড়ুওয়ালা ট্রাকভাড়া করে মেলায় এসেছেন। একেকটি ঝাড়ুতে গাড়িভাড়া পড়েছে ২ টাকা।
১০৮তম বলী খেলার আসর বসবে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল)। নিয়ম অনুযায়ী খেলার আগের দিন, মেলার দিন ও পরের দিন বৈশাখী মেলা বসে। ইতিমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কামার, কুমোর, তাঁতিসহ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং গৃহস্থালিসামগ্রীর পসরা নিয়ে মেলা এসে পৌঁছেছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে বিকিকিনিও শুরু হয়েছে। বরাবরের মতো বিক্রির শীর্ষে ফুলের ঝাড়ু।
বাঁশখালী থেকে ফুলের ঝাড়ু এনে জেলখানার সামনে পসরা সাজিয়ে বসেছেন মোহাম্মদ রফিক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে ঝাড়ুর ফুলগুলো কাঁচা নিয়ে আসা হয়। এরপর শুকানো হয়। তারপর শ্রমিক দিয়ে বিভিন্ন কোয়ালিটির ঝাড়ু তৈরি করা হয়।
আরেকজন ঝাড়ুওয়ালা বললেন, তিন পার্বত্যজেলা, রামু, চকরিয়া, সীতাকুণ্ডের পাহাড় থেকেই ফুলের ঝাড়ুর কাঁচামাল আসে। শহরে তো রীতিমতো ঝাড়ুর কারখানার আছে আগ্রাবাদ এলাকায়। তবে কারখানার ঝাড়ু আর চকরিয়া, বাঁশখালীর গৃহস্থের ঝাড়ুর মানে অনেক তারতম্য আছে।
রঙ্গিপাড়ার একটি কারখানা থেকে প্রচুর ঝাড়ু এসেছে মেলায়। কিছু ধাতব তার দিয়ে বাঁধা। কিছু আবার প্লাস্টিকের নলে (পাইপে) ভরা। কিছু বেত দিয়ে বাঁধা। ওজনে, লম্বায়, সৌন্দর্যে নানান পার্থক্য। দামেও অনুরূপ।
আন্দরকিল্লা মোড়ে ঝাড়ু দরদাম করছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মফিজ আহমেদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জব্বারের বলী খেলা থেকে আর কিছু কিনি বা না কিনি ছয় জোড়া ফুলের ঝাড়ু আর এক জোড়া হাতপাখা কিনতেই হয়। এবার ভালোমানের হাতপাখার দাম হাঁকা হচ্ছে জোড়া ৪০০ টাকা। ফুলের ঝাড়ু জোড়া ১০০-১২০ টাকা। দাম প্রতিবছর বাড়তেই আছে।
গৃহিণী আসমা আকতার তিন জোড়া ফুলের ঝাড়ু কিনেছেন ৩০০ টাকায়। বললেন, প্রথম দিকে দাম একটু বেশি হাঁকে। মেলার শেষ দিন ও পরে দাম পড়ে যায়। অলিগলির হার্ডওয়্যারের দোকানে ফুলের ঝাড়ু সারা বছরই মেলে তবে টেকসই হয় না। ভেঙে যায়, খুলে যায়। মেলা থেকে শক্তপোক্ত দেখে ঝাড়ু কিনতে পারি। ছয়টি ঝাড়ুতে বছর চলে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘন্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এআর/টিসি