ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাঁচ হাজার কোটি টাকায় চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতামুক্ত হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
পাঁচ হাজার কোটি টাকায় চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতামুক্ত হবে ‘চিটাগাং ফ্লাড কনট্রোল অ্যান্ড ওয়াটার লগিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ পরিকল্পনার ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট গ্রহণ করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

চট্টগ্রাম: জায়গা অধিগ্রহণ ছাড়া পাঁচ হাজার কোটি টাকায় ‘চিটাগাং ফ্লাড কনট্রোল অ্যান্ড ওয়াটার লগিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ মাসে ‘পাওয়ার চায়না’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনাটির ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করেছে জানিয়ে মেয়র বলেন, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে জি টু জি পদ্ধতিতে তিন বছরে চীন সরকারের অর্থায়নে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হবে। জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের জন্য এর বিকল্প নেই।

রোববার (২৩ এপ্রিল) আন্দরকিল্লার নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনার ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট উপস্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র এসব কথা বলেন।

আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, শুক্রবার (২১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম শহরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল।

সাংবাদিকরা সমস্যা তুলে ধরেছেন সেজন্য আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ জানাই, একই সাথে সমস্যাটা কখন থেকে শুর‍ু হয়েছে সেটিও তুলে ধরবেন। আমার আন্তরিকতার অভাব আছে কিনা, ব্যর্থতা আছে কিনা তা জনগণ বিচার করবে। আমার পিরিয়ডের মাত্র দুবছর চলছে। আরও তিন বছর সময় আছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কর্ণফুলীর গাইডওয়াল, সব খালের মুখে রেগুলেটরসহ পাম্প হাউস, ড্রেজিংয়ের আরেকটি ডিপিপি তৈরি করেছি। পাওয়ার চায়না নিজস্ব অর্থায়নে ১০ মাসে ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট তুলে ধরেছে। সব দোষ আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে তো হবে না। এটি উচিত কিনা আপনাদের (সাংবাদিক) বিবেকের কাছে আমি প্রশ্ন রাখছি। ওই দিন হাই টাইড (ভরা জোয়ার) থাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। এখানে আমার করার কিছুই নাই। আমি তো রাতারাতি কিছু করতে পারি না। আমি উদ্যোগ ও পরিকল্পনা যথাসময়ে নিয়েছি। ন্যায় ও সত্যের পক্ষে আপনারা অবস্থান গ্রহণ করুন।  

চট্টগ্রাম শহরের জন্য জলাবদ্ধতা অন্যতম প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি ১ বছর ৮ মাস ২৮ দিন। জলাবদ্ধাতার অনেক কারণ আছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কীভাবে জলাবদ্ধতার মতো একটি মারাত্মক অভিশাপ থেকে মুক্তি দেওয়া যায়। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সাজিয়েছি। স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে নিয়মিত খাল-নালা পরিষ্কার করা। এটি চলমান প্রক্রিয়া। জলাবদ্ধতার সমস্যা আমার আমলে সৃষ্টি হয়নি। এটি আমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে পারি দায়িত্ব গ্রহণের পর কোথাও খাল-নালা অবৈধ দখল হয়নি। কোথাও দখল হয়েছে এ অপবাদ কেউ দিতে পারবে না। আমার আগে অনেক খাল দখল হয়েছে। অনেক খাল ভরাট হয়ে গেছে। যার কারণে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এসব খাল খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করছি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে।

মেয়র বলেন, পাহাড়, নদী, সাগর, সমতল এ চারের সমন্বয়ে চট্টগ্রাম শহর। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এ শহরের অনেক পাহাড় নির্বিচারে কর্তন করা হয়েছে। এসব বালুর পাহাড়। বাতাসে উড়ে। বৃষ্টিতে ক্ষয় আরও বেশি হয়। বৃষ্টির সঙ্গে এসব বালু রাস্তায় নেমে আসে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শহরে অনেক সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নির্মাণসামগ্রী বৃষ্টির সাথে মিশে নালা ভরাট করে ফেলছে। এ ছাড়া খাল-নালায় বর্জ্য ফেলার বিকৃত অভ্যাস রয়েছে কিছু নগরবাসীর। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকাটাও জলাবদ্ধতার একটি কারণ। সিডিএর মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন না করাটাও জলাবদ্ধতার কারণ।  

জলাবদ্ধতার শিকার লোকজনের চসিক এবার খালের মাটি তোলেনি এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, কেউ যদি বলে থাকে এটা ডাহা মিথ্যা কথা। মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। মূলত খালের মাটি তোলার পর পুনরায় সিলট্রেশন হয়েছে, বর্জ্য ফেলায় ভরাট হয়ে গেছে। নগরবাসী ঘণ্টায় ঘণ্টায় পলিথিন ফেলছেন। এটি অপরাধ। ওদের সচেতন হতে হবে। মিথ্যাচার করার কোনো মানে হয় না। আমরা চ্যালেঞ্জ দিলাম। যদি আমরা করিনি কেউ প্রমাণ করতে পারে সত্য প্রমাণিত হলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।    

ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ছেই

দুঃখ প্রকাশ মেয়র নাছিরের

দু’ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি, নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলজট     

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭

এআর/টিসি

 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।