শনিবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, কিছু আছে আওয়ামী লীগ করে, আবার নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
‘যে নেতারা এই বিদ্রোহীদের মাঠে নামান, দলের গলা কাটেন, ছুরিকাঘাত করেন, সেই নেতারা বিদ্রোহীদের চেয়েও বেশি দলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহের উসকানি দাতাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রিপোর্ট আছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, সময়মতো সবাই টের পাবেন, কত ধানে কত চাল।
‘বিদ্রোহের উসকানি যারা দেয় তারা ভাবছে আমি দিচ্ছি প্রমাণ কি। কিন্তু শেখ হাসিনার কাছে প্রমাণ আছে। সব প্রমাণ জমা আছে। তাদের কেউই পার পেয়ে যেতে পারবে না। ’
চা-দোকানে বসে নেতা এবং দলের সমালোচনা না করার জন্য নেতাকর্মীদের কাছে প্রতিশ্রুতি চান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে যত ভুল বোঝাবুঝি থাক, ঘরের কথা ঘরেই রাখবেন। ইউনিয়নের আছে উপজেলা, উপজেলার আছে জেলা, জেলার আছে কেন্দ্র। সেক্রেটারির উপর সভাপতি আছে। ঘরের বিচার ঘরে রাখুন। চা দোকানে বসে পার্টির সমালোচনা, নেতার সমালোচনা করলে ইজ্জত বাড়বে না, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।
‘ছোটখাট ভুলত্রুটি ঘরোয়াভাবে বসে সমাধান করুন। কথায় কথায় মুখোমুখি, কথায় কথায় মারামারি, কথায় কথায় খুনোখুনি যেন না হয়। ’
‘দল করলে দলের নিয়মশৃঙ্খলা মানতে হবে। যত বড় প্রভাবশালী হোন, দলের নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে। ’
অপকর্ম আর খারাপ আচরণের মাধ্যমে যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন তাদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো কোন কাজ কেউ করবেন না । চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লার চেহারা পাল্টে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। অথচ আমরা জায়গায় জায়গায় কলহের আগুন আর অপকর্ম করে উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছি।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল প্রতিনিধিদের নেতাদের বিভিন্ন বিশেষণে ভূষিত করা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, তৃণমূলের কাছ থেকে সমস্যা শুনতে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের মধ্যেও নেতাদের খুশি করার যে প্রবণতা দেখলাম এটা ভবিষ্যতের জন্য শুভ নয়। বক্তব্যের সময় ৫ মিনিট, ৪ মিনিট নেতাদের বিশেষণ দিতে চলে যায়।
‘নেতাদের নয়, জনগণকে খুশি করুন। ভোটারদের খুশি করুন। ’ বলেন ওবায়দুল কাদের
নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সহ-সভাপতি ও রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা এবং সীতাকুণ্ডের সাংসদ দিদারুল আলম।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালামের সঞ্চালনায় তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে ২৫ জন বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
আরডিজি/টিসি