ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ছেই

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ছেই ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সকাল সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত আবহাওয়া অফিস যখন ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কর্ণফুলী নদীতে তখন জোয়ার। ফলে বৃষ্টির পানি নামতে পারেনি খাল বেয়ে নদীতে। নগরীর ষোলশহর, মুরাদপুর, প্রবর্তক, কাপাসগোলা, চকবাজার, আগ্রাবাদসহ নগরীর নিম্নাঞ্চল কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।

রাস্তাঘাট অলিগলি পেরিয়ে জলাবদ্ধতার পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়িতে। দুর্ভোগের নানা চিত্র উঠে এসেছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

রীতিমতো নোংরা পানিতে সাঁতার কেটে অনেকে পৌঁছেছেন কর্মস্থলে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ভোর রাত ২টা ৫৭ মিনিটে কর্ণফুলীতে জোয়ার শুরু হয়।

যা স্থায়ী ছিল সকাল ৯টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত।  ৯টা ১৮ মিনিটে শুরু হয় ভাটা। আবার জোয়ার আসবে বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিটে। যা স্থায়ী হবে রাত ৯টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ছেই

মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা ড. ওয়াজেদ বাংলানিউজকে জানান, তার ছেলে ফাহিম সাফায়াত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম সেমিস্টারে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার থাকায় ফাহিম বাসা থেকে নাশতা করে বের হয়েছিলেন, কিন্তু কোমর পানির কারণে যেতে না পেরে ফিরে এসেছেন।

আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদের বাংলানিউজকে জানান, এক্সেস রোড, শান্তিবাগ, বেপারিপাড়া, মুহুরীপাড়া, রঙ্গিপাড়া, শ্যামলী আবাসিক, আগ্রাবাদ হাউজিং, ছোটপুল এলাকায় পানি উঠে গেছে। মহেশখালে জোয়ারের পানি ঠেকানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী বাঁধ দিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির পানি নামবে কীভাবে। অবিলম্বে মহেশখালের বাঁধ অপসারণ করে একেবারে খালের মুখে স্লুইস গেট দিতে হবে। নয়তো বিশাল একটি এলাকা বর্ষায় সুইমিং পুলে পরিণত হবে। ভারী বৃষ্টির সঙ্গী জোয়ার, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ছেই

আগ্রাবাদের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল হাই বাংলানিউজকে জানান, শেখ মুজিব সড়কের বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মাঠ থই থই করছে জলাবদ্ধতার পানিতে। এখানেই শেষ নয়, হোটেল আগ্রাবাদের সামনেও পানি জমে গেছে।

কাতালগঞ্জ নবপণ্ডিত বিহারের অধ্যক্ষ উপানন্দ মহাথের বাংলানিউজকে জানান, এবার মন্দিরে বেশি পানি ঢুকে পড়েছে। পানির ওপর দাঁড়িয়েই ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়ার স্ত্রী অধ্যক্ষ প্রীতিকণা বড়ুয়ার সংঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দান অনুষ্ঠান করেছি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সরেজমিন পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতার সঠিক কারণ ও করণীয় নির্ধারণে সকালেই নির্দেশ দেন নির্বাহী প্রকৌশলী সুদীপ বসাককে।

যোগাযোগ করলে সুদীপ বসাক বাংলানিউজকে জানান, ষোলশহর, চকবাজারসহ নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে গেছে। কোথাও কোমর পানি আবার কোথাও হাঁটু পানি। কর্ণফুলীর পাড়ে গিয়ে দেখলাম ফুল টাইড (ভরা জোয়ার)। ষোলশহরে বেশি পানি জমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে একে তো চশমা হিলের পাশে খালটিতে যে স্রোতবেগে পানি নামছে তা মুরাদপুর এলাকায় খালটি বেদখল হওয়ায় নামতে পারে না। তার ওপর চাক্তাই খাল ও মির্জা খালে জোয়ারের পানি থমথমে অবস্থায় থাকায় নামতে পারছে না। ভাটা শুরু হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাস্তা থেকে পানি নেমে যাবে।

দু’ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি, নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলজট

বৃষ্টিতে থই থই চারদিক, দুর্ভোগে নগরবাসী

বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad