রোববার (০৯ এপ্রিল) বিকেলে মেয়রের দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র নাছির এসব কথা বলেন।
সাবেক মেয়রকে ইংগিত করে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, উনি কাউকে বাপ ডাকতেও দেরি করেন না, গালি দিতেও দেরি করেন না।
এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী গরম বক্তব্য দেওয়ার ঘোষণা প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আগে কী গরম দেন দেখি। তারপর আমি বলব। সভাটা কে ডাকছে। কে যায়। কী বলে। বক্তব্য কী আসে শুনি। শোনার পর কথা বলার থাকলে বলবো। অগ্রীম ধারণার বশবর্তী হয়ে কেন বলতে যাব?
সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে সব অনিয়ম-দুর্নীতি চেপে গেছেন উল্লেখ করে মেয়র নাছির বলেন, লেকসিটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন, কিন্তু চারশ’র বেশি প্লট করা সম্ভব নয়। শতাধিক বরাদ্দ গ্রহীতাকে বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না, জায়গা নেই। এটি প্রতারণা। মাদারবাড়ির রেলওয়ের সেখানেও একই অবস্থা। অনেক জায়গা কিনেছেন কোনো দলিল নেই, মালিকানার হদিস নেই। ড্রেনের ওপর ভবন তৈরি করা হয়েছে কার আমলে? আগ্রাবাদে পার্কিংয়ের জায়গায় মার্কেট তৈরি হয়েছে কার আমলে? চসিকের পানি, বাতি, ওষুধ, শিকলবাহা বিদ্যুৎ কারখানা সব ফ্লপ মেরেছে কেন? আমি এসে দেখি চসিকের ১২ জন স্টাফ উনার বাসায় কাজ করছে, আমি প্রত্যাহার করে নিয়ে এসেছি। অন্তর্জ্বালা তো ওই জায়গায়।
সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় সমিতির বক্তব্য প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বন্দর চেয়ারম্যান আমাকে অবগত করেছেন, আধুনিক উন্নতমানের পরিবেশবান্ধব স্বাস্থ্যসম্মত মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন নিয়ে যেকোনো জায়গায় ব্যবসা করার অধিকার আছে। চট্টগ্রাম শহরে একই জায়গায় একাধিক মার্কেট কি নেই। এগুলো অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করা। এগুলো রাজনীতির বিষয় না। আমি রাজনৈতিক দলের পদে আছি। আমরা কী করবো, আমাদের এখতিয়ার, করণীয় নির্ধারণ করা আছে। সমাজের সব বিষয়ে রাজনীতিকদের নাক গলানো উচিতও নয়। যদি ওই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে ভিন্ন কথা।
হোল্ডিং ট্যাক্স প্রসঙ্গে বিরূপ সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি গেজেট সিটি করপোরেশনকে ২৭ শতাংশ কর আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো স্বাস্থ্য খাতে কর নিচ্ছি না। পাঁচ বছর পর পর আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে চসিক কর পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম শহর আজ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে এর কারণ পরিকল্পিত কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এত পুরোনো সিটি করপোরেশন ড্রেনেজ ব্যবস্থা হলো না কেন?
চৈত্র মাসে জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বহদ্দারহাট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, খাতুনগঞ্জে এবার পানি ওঠেনি। ফ্লাইওভারের নিচে মাটির বিশাল বিশাল স্তূপ। বৃষ্টির পর সব মাটি নালায় গেছে। সিলট্রেশন আছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ আছে। নালা ভরাট হয়ে গেলে ওভার ফ্লো হবেই। চট্টগ্রাম শহরে একসঙ্গে এতগুলো উন্নয়নকাজ চলছে এর ইফেক্ট পড়েছে।
তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং নৌবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি হলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে নিরসন হবে। এ ছাড়া নগরীর সব খালের মুখে পাম্প হাউসসহ স্লুইসগেটের একটি প্রকল্প পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। বারই পাড়া নতুন খাল খননের প্রথম লে-আউটে ভুল ছিল। আমি নতুন করে ডিজিটাল সার্ভে করিয়েছি। ওয়াসার সঙ্গে ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছে। এর মধ্যে ড্রেনেজ পার্টটা চসিক করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এআর/টিসি