ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বৃষ্টিতে থই থই চারদিক, দুর্ভোগে নগরবাসী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
বৃষ্টিতে থই থই চারদিক, দুর্ভোগে নগরবাসী বৃষ্টিতে থই থই চারদিক, দুর্ভোগে নগরবাসী। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: বিকেল তিনটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে মাত্র ৩১ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এরপরের তিন ঘণ্টায় পড়েছে ২৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার। এতটুকু বৃষ্টিতে নগরীর নিম্নাঞ্চলে থই থই করছে পানি। কোথাও হাঁটু সমান আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমেছে মূল সড়কে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, চকবাজার, বাকলিয়া, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের উত্তর পাশের সড়ক, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, কমার্স কলেজ রোড, হোটেল আগ্রাবাদের সামনেসহ বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা মূল সড়কে আটকা পড়েন নারী-শিশু-বৃদ্ধাসহ নানা বয়সী মানুষ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জলাবদ্ধতার ছবি দিয়ে অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

আগ্রাবাদের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, নালা-নর্দমাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না।

হোটেল আগ্রাবাদের সামনে পানি জমে গেছে, কমার্স কলেজ রোডে পানি, এক্সেস রোডে পানি, শান্তিবাগ আবাসিকে পানি। চলাফেরায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রিকশা ছাড়া কোনো গাড়ি বলতে গেলে চলছে না। বৃষ্টিতে থই থই চারদিক, দুর্ভোগে নগরবাসী।  ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিম বাংলানিউজকে জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে নালা উপচে মূল সড়কে কোমর পানি জমে গেছে। দেখতে দেখতে পানি বেড়ে গেল। একটু বৃষ্টিতে যদি এই অবস্থা হয় বর্ষায় তো পুরো শহর ডুবে থাকবে। খাল খননের নামে কোটি কোটি টাকা জলে যাচ্ছে।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টিপাতে নগরীর নিম্নাঞ্চলে পানি দ্রুত নামতে না পেরে কিছু কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে পানি জমে গেছে। আশা করছি, বৃষ্টি থামার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে পানি নেমে যাবে। চসিকের কর্মীরা যেখানে পানি আটকে থাকছে সেখানে কাজ করছে।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চাক্তাই, মহেশখালসহ নগরীর বড় নালাগুলো থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ চলমান আছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ডিউটি অ্যাসিস্টেন্স মো. মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ কারণে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। উত্তর বঙ্গোপসাগরের সব মাছ ধরার নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি জানান, সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে বিকেল তিনটা থেকে ছয়টার মধ্যে পড়েছে ২৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি।  

নালায় পড়ে গেল শিশু

ভারীবর্ষণের সময় নগরীর ষোলশহর বেবি সুপার মার্কেটের পেছনে সানজিদা আলম কাইফা (২) নামের একটি শিশু নালায় পড়ে যায়। পড়ে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক কাঞ্চন বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, পানিতে পড়ে যাওয়া শিশুটিকে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

শিশুর মা নারগিস আকতার ব‍াংলানিউজকে বলেন, আমাদের ভাড়া বাসায় হাঁটুপানি ঢুকে যায়। বিকেল পাঁচটার দিকে কাইফা হঠাৎ করে নালায় পড়ে যায়। সাথে সাথে আমি ঝাঁপিয়ে পড়ি। এ সময় স্থানীয়রা মশারি, জাল ইত্যাদি নিয়ে এসে খোঁজ করে। একপর্যায়ে পাওয়া যায়। তারপর হাসপাতালে নিয়ে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, আপডেট ১৯৩৮, এপ্রিল ০৪, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।