বুধবার (২৯ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে স্বামী-স্ত্রী জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন।
চবি ছাত্র খুনের ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছিল বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। এরা হল, মো. ইকবাল হোসেন (২৭) ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার রুম্পা (২১) এবং দুই সৎ ভাই মো. তৈয়ব ও মো. হেলাল।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাসুদ নামে ইকবালের আরেক সৎ ভাই পলাতক আছেন বলে জানায় পুলিশ।
চারজনের মধ্যে তৈয়ব ও হেলালকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শামীম শেখ। মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমান প্রত্যেকের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে ওসি মহসিন।
গ্রেফতারের পর ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানিয়েছিলেন, আলাউদ্দিন ছিলেন প্রতিবেশি ইয়াসমিন আক্তার রুম্পার গৃহশিক্ষক। পড়াতে গিয়ে একসময় রূম্পার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন আলাউদ্দিন। রুম্পার বিয়ে হয়ে যায়। আর কিছু ছবিও ভিডিও ফুটেজের কারণে আলাউদ্দিনের সঙ্গে সেই সম্পর্ক একসময় রুম্পার কাছে তিক্ততায় পরিণত হয়। শিক্ষক, ভালবাসার মানুষ আলাউদ্দিন এসময় রুম্পার কাছে ধরা দেয় চরম নিপীড়ক হয়ে। ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হতে হতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে রুম্পা। আর আলাউদ্দিনকে জীবন দিয়ে নিপীড়নের খেসারত দিতে হয় রুম্পার স্বামীর কাছে।
আদালত সূত্রে জোনা গেছে, জবানবন্দিতে ইকবাল জানিয়েছেন- রুম্পার ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও আলাউদ্দিনের কাছে ছিল। সেগুলো ফেরত দেয়ার জন্য আলাউদ্দিনকে বলার পর সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় রাগের মাথায় আলাউদ্দিনকে খুন করে তারা।
হত্যার বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দিতে আলাউদ্দিন বলেন, ‘আলাউদ্দিনকে হত্যা করব তা ভাবিনাই। আলাউদ্দিন আমার স্ত্রীকে হত্যা করায় রাগের মাথায় আমি তাকে হত্যা করি। তাকে মারধরের সময় আমি ও হেলাল ছিলাম। তৈয়ব, মাসুদ ও আমার স্ত্রী (রুম্পা) নিচে ছিল। তাদের কোন দোষ নেই। সব দোষ আমার। আমি রাগের মাথায় তাকে হত্যা করেছি। ’
জবানবন্দিতে রুম্পা জানান, ঘটনার সময় স্বামীর নির্দেশে রুম্পা বাসার নিচে চলে যায়। পরে স্বামী তাকে বলেন, আমরা আলাউদ্দিনকে মেরে ফেলেছি।
২২ মার্চ রাতে নগরীর বায়েজিদ থানার শহীদ নগর এলাকার ওমান প্রবাসী আবু ছৈয়দের মালিকানাধীন চারতলা বাড়ির তিনতলার ফ্ল্যাট থেকে আলাউদ্দিনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
পরদিন বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বাবা ও ভাই এসে আলাউদ্দিনের মরদেহ শনাক্ত করেন।
এই ঘটনায় আলাউদ্দিনের বাবা শাহআলম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
আরডিজি/টিসি
শিক্ষক থেকে নিপীড়ক, মৃত্যুতে খেসারত