ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘জঙ্গিরা বাসা ভাড়া নিলে দিনে বের হয় না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
‘জঙ্গিরা বাসা ভাড়া নিলে দিনে বের হয় না’ ডিআইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: জঙ্গিরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন কেউ নয় মন্তব্য করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, যারা ২০১৩-১৪ সালে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করেছিল তারাই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গিরা নিজবাসায় থেকে জঙ্গি তৎপরতা চালায় না। তাই তারা হিজরত করে দূরবর্তী জায়গায় এসে বাসা ভাড়া নেয়। জঙ্গিরা বাসা ভাড়া নিলে দিনের বেলা কেউ বের হয় না। এমন ভাড়াটিয়া থাকলে পুলিশকে জানাতে হবে।

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে ডিআইজি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন।

অতিথি ছিলেন নগর পুলিশের কমিশনার মো. ইকবাল বাহার।

সভাপতিত্ব করেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) ফারুক আহমদ।

বক্তব্য দেন সংবর্ধনা কমিটির সদস্যসচিব ও চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিট কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন, মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, সাংবাদিক নিরুপম দাশগুপ্ত, এসআই আবুল কাশেম প্রমুখ। অতিথিরা ৭৬জন মুক্তিযোদ্ধা-পুলিশদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন।

ধর্ম ব্যবসায়ীরা আবার রাস্তায় নেমেছে মন্তব্য করে ডিআইজি বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ীরা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের উন্নয়নের যে কাজ চলছে সব বন্ধ করে দেওয়া। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে শত শত হাজার ‍হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার কাজ চলছে। বিদেশি ইঞ্জিনিয়াররা যাতে এসব প্রকল্পে কাজ না করে সেজন্য বিদেশিদের টার্গেট করেছে। যাতে কোনো বিদেশি মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো উন্নয়ন কাজে সাহায্য করতে না পারে। পদ্মা সেতু যাতে পদ্মায় ডুবে থাকে, ঢাকায় মেট্রোরেল ডুবে থাকে, হাজার কোটি টাকার সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে বন্ধ হয়ে যায়। এটাই তারা চায়।  

তিনি বলেন, যেসব মানুষ ভেতরে, অন্তরে গর্ব থাকে না তাদের প্রকৃত মানুষ বলা যায় না। মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল যে পুলিশ বাহিনী তার অংশ আমি। এটি আমার গর্বের। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জাতিকে গর্বহীন করা হয়েছিল। বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ গর্বের জায়গা মুক্তিযুদ্ধ। এ গর্ব যাতে করতে না পারে সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরোধিতা করেছে সরাসরি রাজাকার, আলবদর, আল শামস কমান্ডারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছিল, সাংসদ করা হয়েছিল, জিয়াউর রহমানের সময় কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, যে জাতি যুদ্ধে জয়ী হয় তারা উন্নতি করতে পারে। পরাজিত জাতি কখনোই যুদ্ধজয়ী জাতির মতো উন্নতি করতে পারে না। পাকিস্তানের কী অবস্থা আজ দেখেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। যে দলটি স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে সেই দলটি আজ দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম উন্নত হয়েছে যে দল স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে তারা আজ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে বলে। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা স্বাধীনতা চায়নি, বাংলাদেশের অস্তিত্ব স্বীকার করেনি তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। পেয়ারে পাকিস্তানের নাগরিকরা দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত, ব্যথিত। তারা এখনো মনে করে তাদের মূল মাতৃভূমি পাকিস্তান। পাকিস্তান উন্নত হয়নি বাংলাদেশ উন্নত হবে কেন এটি তারা কোনোভাবে সহ্য করতে পারছে না।

ডিআইজি বলেন, আমার গ্রাম থেকে ছোটবেলায় ১০-১২ জন স্কুলে যেতাম। দু-চারজন স্যান্ডেল পায়ে দিতাম। বাকিরা খালি পায়ে স্কুলে যেত। এখন রিকশাওয়ালার সন্তানও বাটা জুতো পড়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়ে শুধু মেধার জোরে ডিআইজি হয়েছি। আপনাদের (মুক্তিযোদ্ধা) সন্তান হয়তো ডিআইজি হতে পারেনি, কিন্তু একজন বাঙালি তো ডিআইজি হয়েছে। এটাই গর্বের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

**‘ভাস্বর’র মোড়ক উন্মোচন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।