ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দায়িত্ব হস্তান্তর না করে বহাল থাকার তদবিরে পদ্মার এমডি

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
দায়িত্ব হস্তান্তর না করে বহাল থাকার তদবিরে পদ্মার এমডি

চট্টগ্রাম: পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আবুল খায়েরকে একই পদে গত সোমবার (২০ মার্চ) যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমেটেডে বদলি করা হয়।  

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (অর্থ) শংকর প্রসাদ দেব স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো, যা অনতিবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

পাবলিক করপোরেশন্স (ম্যানেজম্যান্ট কো-অর্ডিনেশন) অধ্যাদেশ ১৯৮৬ (অর্ডিন্যান্স নং-৮৬) এর ১৩ নম্বর ধারায় অর্পিত ক্ষমতা বলে জারি করা ওই আদেশের চারদিন পরও নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি মো.আবুল খায়ের।

ফলে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে পারছেন না যমুনা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.মাসুদুর রহমান।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আগের কর্মস্থলে বহাল থাকতে বদলি আদেশ জারি হওয়ার পর বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেছেন পদ্মার এমডি।

আদেশ হাতে পাওয়ার একদিন পরই তিনি ঢাকায় চলে যান।

সূত্র জানায়, নিয়ম না থাকলেও বিগত দশ বছর ধরে পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে চাকরি করে যাচ্ছেন আবুল খায়ের। বেশ কয়েকবার বদলি করা হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বদলি আদেশে পরিবর্তন এনে স্বপদে বহাল রয়েছেন। পদ্মা অয়েলে ২০১০ সাল থেকে এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদ্মা অয়েল কোম্পানির লিমিটেড’র একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, দায়িত্ব হস্তান্তর না করার কারণে নতুন এমডি যোগ দিতে পারছে না। দায়িত্ব হস্তান্তর না করে তিনি বদলি আদেশ হাতে পাওয়ার পর ঢাকায় চলে যান।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আস্থাভাজন কয়েকজন কর্মকর্তা ও কিছু সিবিএ নেতাকে বশে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন আবুল খায়ের। যারা প্রতিবাদ করেছেন তারাই রোষাণলে পড়ে হয়রানি হয়েছেন। অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী বর্তমান এমডি চলে যাওয়ার পক্ষে। তাদের মতে.‘এখানকার সবাই বর্তমান এমডি কখন যাবে সেইদিন গুনছে। ’  

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা অয়েলে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা তিনটি মামলায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

প্রধামন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক আবুল কালাম শামসুদ্দিন ২০১৫ সালের ২৮ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পাদ বিভাগের সচিবকে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কার্যালয়কে অবহিত করার অনুরোধ করেন।

সচিব বিভাগ থেকে বিপিসি চেয়ারম্যানকে আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় দুই বছর পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বিপিসি চেয়ারম্যান।

অভিযোগ রয়েছে বিপিসির উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাগে রেখে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। একইভাবে দুর্নীতি ঢাকা রাখতেও ওই চক্রকে ম্যানেজ করে চলেছেন। চক্রটিকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিপিসি চেয়ারম্যান আবু হেনা মো.রাহমাতুল মুনিম, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়ের ও পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানুসুদর রহমানের মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।