ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘উত্তর জেলা বিএনপির বক্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
‘উত্তর জেলা বিএনপির বক্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত’ যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

চট্টগ্রাম: যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে উত্তর জেলা বিএনপি পত্রপত্রিকায় যে কটূক্তিপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছে তা শিষ্টাচার বহির্ভূত, কুরুচিপূর্ণ এবং নোংরা মানসিকতার পরিচায়ক।

সোমবার (২০ মার্চ) মহানগর যুবলীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। দারুল ফজল মার্কেটস্থ কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু।

যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকার পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার ও মাহবুবুল হক সুমন।

বক্তব্য দেন মহানগর যুবলীগের সদস্য আকবর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মাহবুব আলম আজাদ, নেছার আহমদ, আবু সাঈদ জন, এসএম সাঈদ সুমন, হাবিব উল্লাহ নাহিদ, নুরুল আনোয়ার, শহীদুল ইসলাম শামিম, আবদুর রাজ্জাক দুলাল, আসহাব রসুল জাহেদ, আবদুল আজিম, শেখ নাছির আহাম্মদ, নাজমুল হাসান সাইফুল, সনত বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন দেলু, মো. ইব্রাহিম, মো. আলমগীর, আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, ইকবাল ইকরাম শামীম, এসএম ফারুক, কাজী রাজেশ ইমরান, কাজল প্রিয় বড়ুয়া, মুজিবুর রহমান মুজিব, হোসেন সরওয়ারদী, আসিফ মাহমুদ, ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে তারেক ইমতিয়াজ ইমতু, জসিম উদ্দিন, মান্নান বিশ্বাস, নজরুল ইসলাম, আবুল বশর, মো. সানাউল্লাহ, মো. শাহীন সরওয়ার, মো. সালাউদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ওমর ফারুক চৌধুরীর সত্য পর্যালোচনাপূর্ণ বক্তব্যে বিএনপির জনবিচ্ছিন্নতা ও যে দৈন্যদশার বিষয়টি উঠে এসেছে তাই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির গাত্রদাহ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষ বর্তমান বিএনপি প্রেস ব্রিফিং-বিবৃতি পার্টিতে পরিণত হয়েছে। উত্তর জেলা বিএনপির নামে কতগুলো জনবিচ্ছিন্ন নেতৃবৃন্দের বিবৃতিও তারই প্রমাণ। বিএনপি ভাড়ায় নেতা, মেয়র, এমপি বানায় একথা চিরন্তন সত্যি। বিএনপির নেতৃবৃন্দের অতীত পর্যালোচনা করলে যা প্রমাণিত হবে।

তারা বলেন, একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে মাঠে-ময়দানে বিচরণ, সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন জনগণের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে প্রশাসনকে মোকাবেলা করার মতো সারাদেশে ৫০জন নেতাও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পলিট্রিক্সকে ডিফিকাল্ট করার থিউরি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এখন তার নিজের গড়া সংগঠনই ডিফিকাল্ট সংগঠনে পরিণত হয়েছে। যাদের নিজেদেরই অস্তিত্ব নেই তারা কিভাবে ওমর ফারুক চৌধুরীর মতো একটি বৃহৎ শক্তিশালী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যানকে প্রতিহত করবে, অবাঞ্ছিত করবে? বিবৃতিদাতা পদ-পদবিবিহীন তথাকথিত নেতারা নিজেরাই আগে থেকে স্ব স্ব সংগঠনে অবাঞ্ছিত।

যুবলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান একজন ব্যক্তি নন, তিনি নিজেই ইতিমধ্যে একটি ইনস্টিটিউট। তিনি সারা বাংলায় যুবসমাজে জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। তার নেতৃত্বে যুবলীগ ব্যতিক্রম ধারার রাজনীতি প্রবর্তন হয়েছে।

মেধা, মনন, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত সংগঠন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গবেষণালব্ধ দর্শন ২০০৯ সালে শুরু করে ২০১১ সালে জাতিসংঘে স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি করিয়েছেন। সারাদেশে সামাজিক অবক্ষয়, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুব জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব গবেষণা কেন্দ্র, যুবকদের কর্মমুখি করা, তথ্য প্রযুক্তিসমৃদ্ধ যুবসমাজ গড়তে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। তার উদ্যোগে সংগঠন গ্রন্থ, স্মারকগ্রন্থ, পুস্তিকা, সিডিসহ বিগত পাঁচ বছরে তিন শতাধিক প্রকাশনা প্রগতিশীল সুধিসমাজে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। সংগঠন করলে কর্মসূচি করতে হয়। কর্মসূচি, আন্দোলনের দলিল, সংবাদচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রচার করা, প্রতিটি জাতীয় দিবসে বড় বড় সমাবেশস্থলে বুকস্টল স্থাপন করা ওমর ফারুক চৌধুরীর আগে এ রেওয়াজ দেশে ছিল না। শুধু তাই নয় বাংলা একাডেমির একুশের বইমেলায় ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বইমেলায় লাখ লাখ বই বিক্রি করে যুবকদের মাঝে পাঠক সৃষ্টিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চরিত্রহীন, বর্ণচোরা, বিভিন্ন সময়ে স্বৈরাচারের দালালি করা, বারে বারে দল ও ভোল পাল্টানো এসব নেতার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রগতিশীল স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ ওমর ফারুক চৌধুরীর কিছু যায় আসে না। ওমর ফারুক চৌধুরীর পরিবার ও তার বিরুদ্ধে যারা বিষোদগার করেছেন তারা জানেন না ওমর ফারুক চৌধুরীর বাবা ডা. শামসুল হুদা চৌধুরী উত্তর চট্টগ্রামের একজন স্বনামধন্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় ডাক্তার ছিলেন। রাউজান আরআরএসি ইনস্টিটিউটের দীর্ঘদিন সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি রাউজান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি এবং রাউজান ও পটিয়ার মেডিকেল অফিসার ছিলেন। যদিও তিনি ছিলেন একজন সমাজকর্মী তদুপরি সরকারি কর্মকর্তা থাকার কারণে তার রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না। মুসলিম লীগ করাতো দূরের কথা। তিনি সরাসরি রাজনীতি না করলেও পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে উদারমনা ছিলেন। ওমর ফারুক চৌধুরী ৬৬ সালে রাউজান কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ৬৮ সালে রাউজান থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম সদর মহকুমা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা, ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্রসংসদের সাংস্কৃতিক ও নাট্য সম্পাদক পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য, চট্টগ্রাম জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।

সমাবেশ থেকে কটূক্তির প্রতিবাদে সপ্তাহব্যাপী নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেন নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭

এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।