ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘কে কমিশনের ভাগ কত দেবে, এসব চলবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
‘কে কমিশনের ভাগ কত দেবে, এসব চলবে না’ ওয়াসার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

চট্টগ্রাম: বন্দরনগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিমানবন্দর সড়কের দূরবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এই সড়কের উপর দুটি সেতুর কাজ শেষ করতে দেরি হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজ দলের মেয়রের কাছে জানতেও চেয়েছেন তিনি।

রোববার নগরীতে ওয়াসার অনুষ্ঠানে রাস্তার দূরবস্থা এবং কর্ণফুলী নদীর দূষণের কথা বলতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাকে কাজ দেব, কে কাজ পাবে, কে পেল না, কে কমিশনের ভাগ কত দেবে, এসব দুই নম্বরি আমার সঙ্গে চলবে না।

‘আমি এখানে কোনভাবেই পয়সা কামাতে আসিনি, ব্যবসা করতে আসিনি।

  আমি এখানে জনগণের সেবা করতে এসেছি, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি। ’ বিপুল করতালির মধ্যে বলেন প্রধানমন্ত্রী‍

এসময় চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন মঞ্চে বসা ছিলেন।

 

বিমানবন্দর সড়কের অবস্থা দেখে দু:খ পাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাস্তার এত দূরবস্থা কেন? দুইটা ব্রিজ, বড় বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে।   সেই ব্রিজের কাজ শেষ হচ্ছে না কেন ? মেয়র সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন এটা হল না ? এটি তো এলজিইডি, মানে সিটি করপোরেশনের করার কথা।   জাইকা সহযোগিতা করছে।   জাইকা তো কোন কাজে এত দেরি করে না।  

দুই বছর আগেও ব্রিজগুলোকে একই অবস্থায় দেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

‘তখন আমি আমার মিলিটারি সেক্রেটারি আবেদিনকে বলেছিলাম, তুমি তো চট্টগ্রামের মানুষ, অথচ চট্টগ্রামের রাস্তার এই অবস্থা।   সেগুলো একটু দেখাশোনা কর।   তখন সে খবর নিয়েছিল।   বলেছিল, ব্রিজগুলো নাকি হয়ে যাবে।   ছোট ছোট ব্রিজ, খুব বেশি কাজ না।   ২০১৫ সালে ‍তাকে পাঠাই আর এখন ২০১৭, এখনও পর্যন্ত সেই ব্রিজগুলো হয়নি। ’ বলেন প্রধানমন্ত্রী

‘কেন হয়নি, এটা আমি মেয়র সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলাম।  এই দেরিটা কেন হচ্ছে, সেটা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।   আমরা চাই না, চট্টগ্রামের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাস্তাঘাটের এত দূরবস্থা থাকুক। ’

‘কাজ যদি করতে না পারে তাহলে ব্রিজ খুলে রেখে দেয়া হবে কেন ? কোন কন্ট্রাক্টর নিশ্চয় করছে কাজটা।   তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে না কেন ? সমস্যা থাকলে সমাধান হবে না কেন ? এই সমস্যার সমাধান করার জন্য আর বিলম্বের জন্য আমাকে যদি কোন ব্যবস্থা নিতে হয়, আমি নেব। ’

‘কিন্তু আমি আগামীবার এসে যেন রাস্তার এই দূরবস্থা আর না দেখি। ’ মুর্হুমুহু করতালির মধ্যে বলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী নদীকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সেন্ট্রাল স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।   স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দ্রুত প্রকল্প গ্রহণ করে ডিপিপি পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।  

‘আমি আশা করি, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করার জন্য খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।   প্রকল্প গ্রহণ করুন।   ডিপিপি তৈরি করে দ্রুত পাঠান, একনেকে তো আমি সভাপতিত্ব করি।   কাজেই অনুমোদন তো আমিই দেব।   কিন্তু অনুমোদন দেব, কাজ হবে না, কাজে দেরি হবে, সেটা কিন্তু সহ্য করব না। ’ বলেন প্রধানমন্ত্রী

নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবে ওয়াসার ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।   বক্তব্যের আগে নগরী থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরায় সাড়ে ৩৫ একর জমির ওপর নির্মিত এই শোধনাগার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সচিব আব্দুল মালেক এবং চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।   স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়াসা, চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

অপকর্ম করলে ছাড়বো না: প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।