দু’য়েকটি গাড়ি চলাচলের চেষ্টা করলেও আন্দোলনরত শ্রমিকরা তা থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। তারা চালককে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য করে।
ফলে নগরীতে সিটি সার্ভিস, মিনিবাস, টেম্পুসহ সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সড়কে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করছে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) সুজায়েত ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দ্বিতীয়দিনের মতো নগরীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই কোন গাড়ি চলাচল করেনি। এছাড়া দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল করছে না।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে গণপরিবহন চলাচল না করায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। নগরীর বিভিন্ন জায়গায় বাস ও টেম্পু স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেককেই রিকশা, সিএনজি বা পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে দেখা গেছে। এ সুযোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন রিকশা বা সিএনজি চালকরা।
সাইফুল্লাহ নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মানুষ হয়েও পশুর চেয়ে অধম। কেননা, একজন গাড়িচালক একটি প্রাণ কেড়ে নিলে নাকি শুধুমাত্র ২০ হাজার টাকা জরিমানা। এ আইনে পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। মৃত্যুর দায়ে আদালত যখন এক চালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে, তখন সারাদেশে গাড়িচালক ও শ্রমিকরা সন্ত্রাস করছে। কোন গাড়ি চলাচল করতে দিচ্ছে না। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
চকবাজার এলাকার খোরশেদ নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা গণপরিবহন চলাচল করতে দিচ্ছে না। দেশে কি কোন আইন নেই, মানুষের এই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ কি তারা দেখছে না। হাজারো অফিসগামী লোকজন মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা ইঞ্জিনচালিত ব্যাটারিরিকশাও চলাচল করতে দিচ্ছে না। এর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। নাহলে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ চরমে উঠবে।
মানিকগঞ্জে চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় জামির হোসেন নামের এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এরপর ঢাকার সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে ট্রাকচালক মীর হোসেনের ফাঁসির রায় হয়েছে। এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৭
আইএসএ/টিসি